Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Tea Garden

বুড়ো গাছ তুলতে না টি বোর্ডের

এক একটি চা গাছ ৫০-৬০ বছর বয়স পর্যন্ত ভাল মানের পাতা দিতে পারে বলে চা গবেষণা কেন্দ্রের দাবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০৬:০৯
Share: Save:

বুড়ো হয়েছে উত্তরবঙ্গের বহু চা গাছ। কমছে উৎপাদন ক্ষমতা। চা পর্ষদ তথা টি বোর্ডেরই হিসেবে উত্তরবঙ্গের অন্তত ৩৫ শতাংশ চা গাছ দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় বা তার কিছু আগে লাগানো। যার জেরে বাগানগুলির উৎপাদন ক্ষমতা এবং পাতার গুণমানও ক্রমশ কমছে বলে দাবি। চা নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা টি বোর্ড সাম্প্রতিকতম ঘোষণায় জানিয়েছে, পুরনো চা গাছ তুলে নতুন গাছ লাগানোর কোনও অনুমতি এখনই দেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তের পরে জীবনশক্তি হারাতে চলা চা গাছগুলিকে বহন করে চলতে হবে উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলিকে। যার পরিণতিতে উৎপাদন ঘাটতির সমুহ সম্ভাবনা, দাবি শ্রমিক-মালিক দু’পক্ষেরই।

এক একটি চা গাছ ৫০-৬০ বছর বয়স পর্যন্ত ভাল মানের পাতা দিতে পারে বলে চা গবেষণা কেন্দ্রের দাবি। তার পরেই বয়সের ভারে চা গাছের পাতার গুণমান, স্বাদ গন্ধ কমতে থাকে। তার পরে বাগানে একসঙ্গে পুরো একটি বিভাগের পুরনো চা গাছ তুলে ফেলা হয়। এই প্রক্রিয়া খরচসাপেক্ষ বলে দাবি। নতুন গাছে পাতা আসতে ৫-৬ বছর লাগতে পারে। এই সময়টুকুর মধ্যে যে লোকসান হয়, সেই টাকা টি বোর্ড ভর্তুকি হিসেবে দেয়। রাজ্যের চা বাগানগুলি কয়েকশো কোটি টাকা ভর্তুকি বাবদ টি বোর্ডের থেকে পায়। সম্প্রতি বোর্ড জানিয়েছে, বকেয়া সব ভর্তুকি না মেটানো পর্যন্ত নতুন গাছ লাগানোর আবেদন তারা নেবে না।

কনসালটেটিভ কমিটি অব প্লান্ট্যার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অমিতাংশু চক্রবর্তীর প্রশ্ন, “টি বোর্ড কি চা শিল্পের কথা আদৌও ভাবে? নইলে কেন আগেকার ভর্তুকির টাকা বকেয়া পড়ে থাকবে?” ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার সচিব সঞ্জয় বাগচী বলেন, “করোনা-লকডাউনে চা শিল্পে অর্থনৈতিক বোঝা চেপেছে। এই বোঝা সামলাতে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং গুনমানে জোর দিতে হত। ঠিক এই সময়ে সেই সম্ভাবনাতেও কোপ পড়ল।” উদ্বিগ্ন শ্রমিক সংগঠনগুলিও। চা শ্রমিদের যৌথ মঞ্চের অন্যতম সদস্য মণিকুমার ডার্নাল বলেন, “ডুয়ার্সের পুরনো গাছগুলি না তুলে ফেললে উৎপাদন বাড়বে না। ক্ষতি হলে বাগান বন্ধ হবে, তখন মরতে হবে শ্রমিকদের।”

টি বোর্ডের এক কর্তার কথায়, “একদম দেওয়া হবে না, তা তো বলা হয়নি। বকেয়া মিটিয়ে তারপর অনুমতি দেওয়া হবে।” রাজ্যের চা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর মন্তব্য, “আসলে কেন্দ্র টি বোর্ডকে টাকায় দেয়নি।” বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বিষয়টি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tea Garden Tea North Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE