এই এলাকায় ১২ জন কিশোর কিশোরিকে আটকে রেকে কাজ করানো হচ্ছিল। ফাইল চিত্র
দুঃস্থ অভিভাবকদের বছরে মোটা টাকা দেওয়ার শর্তে তাঁদের ছেলেমেয়েদের ভিনরাজ্যে নিয়ে গিয়ে ঠিকাশ্রমিকের কাজে নিয়োগ করছে একটি চক্র। দু’মাস আগে জম্মুর কাঠুয়া জেলার একাধিক হোটেল ও রেস্তরাঁ থেকে রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ থানার বিভিন্ন এলাকার ১০ জন কিশোর ও দু’জন কিশোরীকে উদ্ধার হয়।
তদন্তে নেমে ওই চক্রের বিষয়টি সামনে এসেছে বলে উত্তর দিনাজপুর শিশুকল্যাণ সমিতির দাবি। গত ১০ জুলাই উদ্ধারের পর তাদেরকে কাঠুয়া এলাকার একাধিক সরকারি হোমে রাখা হয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর কাঠুয়া জেলা পুলিশ ও স্থানীয় চাইল্ডলাইনের সদস্যেরা ওই কিশোর-কিশোরীদের রায়গঞ্জ উত্তর দিনাজপুর জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দেন। সমিতির চেয়ারপার্সন অসীমকুমার রায় জানিয়েছেন, ওই ১২ জন কিশোর-কিশোরীকে শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করানো হচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কাঠুয়া জেলার চাইল্ডলাইন ও ওই জেলার শ্রম দফতরের আধিকারিকেরা অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। অসীমের কথায়, ওদের বয়স ১৪ বছরের বেশি হওয়ার কারণে তারা শিশুশ্রমিকের আওতায় পড়বে না। সেইকারণে, তাদেরকে যারা জম্মুতে নিয়ে গিয়ে ঠিকাশ্রমিকের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সমিতির দাবি, রায়গঞ্জের কুমারডাঙ্গি এলাকার এক দম্পতি নিজেদের শ্রমিক সরবরাহকারী এজেন্সির প্রধান বলে দাবি করে বছরখানেক আগে ওই ১২ জনকে জম্মুতে নিয়ে গিয়ে তাদের সেখানকার বিভিন্ন হোটেল-রেস্তরাঁয় ঠিকাশ্রমিকের কাজে নিয়োগ করেন। ওই দম্পতি কিশোর-কিশোরীদের অভিভাবকদের বছরে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়ার শর্ত দিয়েছিলেন।
অসীমের আরও বক্তব্য, ওই ১২ জনের উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে সমিতি জানতে পেরেছে, জেলার ন’টি ব্লকে ২০টিরও বেশি চক্র রয়েছে। সেইসব চক্র দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকার দুঃস্থ পরিবারের অভিভাবকদের বছরে মোটা টাকার শর্তে তাঁদের ১৮ বছরের কম বয়সী ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন রাজ্যে নিয়ে গিয়ে ঠিকাশ্রমিকের কাজে নিয়োগ করেন। প্রতি ঠিকাশ্রমিক বাবদ চক্রের সদস্যেরা বছরে প্রায় এক লক্ষ টাকা আয় করেন। সেইসব চক্রের সদস্যেরা পাচারের সঙ্গে জড়িত কিনা, তা জানতে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy