অবরোধ: দুর্ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ জনতা। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্ঘটনা রুখতে বহু কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ দাবি করছে। তবে বাস্তবে তাতে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। পরপর পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুরে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের যান নিয়ন্ত্রণে গাফিলতির জন্যই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে।
শুক্রবার সকালে ইটাহারের দুর্গাপুর রাজবাড়ি এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে রায়গঞ্জগামী একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা হরেন বর্মন (৬৫) নামে এক ব্যক্তিকে ধাক্কা মারে। শঙ্করপুরের বাসিন্দা হরেনবাবু ঘটনাস্থলেই মারা যান। ওই ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে যান নিয়ন্ত্রণের কাজে গাফিলতির অভিযোগ তুলে স্থানীয় বাসিন্দারা মৃতদেহ আটকে প্রায় একঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের নজরদারি না থাকাতেই এ দিন ওই পিকআপ ভ্যানটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চলছিল।
বৃহস্পতিবার সকালেও ইটাহারের সুলিয়াপাড়াতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ডাম্পারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ছোটগাড়ির আরোহী দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়। জখম হন তিনজন। সেক্ষেত্রেও পুলিশের নজরদারির অভাবে দুটি গাড়ি দ্রুতগতিতে বেপরোয়াভাবে চলার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে দু’সপ্তাহে জেলায় ছ’টি পথ দুর্ঘটনায় ছ’জনের মৃত্যু ও আট জনের জখম হওয়ার ঘটনা ঘটল।
পুলিশের অবশ্য দাবি, পথ দুর্ঘটনা রুখতে গত ১ ডিসেম্বর থেকে জেলার নয়টি থানার দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকার রাস্তায় স্পিড রিডার গান যন্ত্রের মাধ্যমে নজরদারি শুরু হয়েছে। রাতের বেলায় গাড়ি চালানোর সময়ে চালকেরা যাতে ঘুমিয়ে না পড়েন, সে জন্য গত ১০ ডিসেম্বর থেকে জেলায় চালকদের জল ও চা-ও খাওয়াচ্ছে পুলিশ। তবে এ সব দাবি করলেও কাজের কাজ কতটা হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলছে পরিসংখ্যান।
গত ১১ ডিসেম্বর রায়গঞ্জের কুলিক সেতু এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ট্রাকের ধাক্কায় সাইকেল আরোহী এক তরুণীর মৃত্যু হয়। পরদিনই রায়গঞ্জের সোনাবাড়ি এলাকার রাজ্য সড়কে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরবাইক চালক এক যুবকের মৃত্যু হয়। জখম হন ওই বাইকের এক আরোহী। গত ১৬ ডিসেম্বর রায়গঞ্জের অশোকপল্লি এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন জখম হন। একই দিনে ইসলামপুরের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।
বাসিন্দাদের ক্ষোভও তাই বাড়ছে। এ দিন দুর্গাপুর রাজবাড়ি এলাকার দুর্ঘটনার পর বাসিন্দাদের তরফে হিরালাল বর্মন ও মনি সরকার বলেন, ‘‘যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশের গাফিলতি না থাকলে বাসিন্দাদের পর পর মৃত্যু হত না। পথ দুর্ঘটনা রোখার নামে পুলিশ লোকদেখানো বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করেছ।’’ জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের অবশ্য দাবি, ‘‘কোথাও ট্রাফিক আইন না মানা আবার কোথাও যান্ত্রিক গোলযোগ বা চাকা ফেটে পথ দুর্ঘটনা ঘটছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy