Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

গুরুঙ্গদের অস্তিত্ব লোপ পাবে: বিনয়

নিজের অবস্থানের পক্ষে জোর সওয়াল করার পাশাপাশি বিনয় তামাঙ্গ জানান, বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরিদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়াটা এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তার পরেই মূল রাজনীতির স্রোতে ফিরে আসতে ডাক দেন বিমলপন্থীদের প্রতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০২:১৭
Share: Save:

কিছু ক্ষণ আগে জানা গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়। এর মধ্যেই দার্জিলিঙের লালকুঠিতে সাংবাদিক বৈঠক ডাকলেন জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান। সেখানে নিজের অবস্থানের পক্ষে জোর সওয়াল করার পাশাপাশি বিনয় তামাঙ্গ জানান, বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরিদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়াটা এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তার পরেই মূল রাজনীতির স্রোতে ফিরে আসতে ডাক দেন বিমলপন্থীদের প্রতি।

নবান্নে প্রথম সর্বদল বৈঠকের সময় থেকেই বিনয়ের সঙ্গে বিমলের মতভেদ শুরু হয়। প্রথমে জানা গিয়েছিল, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলতে গুরুঙ্গের নেতৃত্বাধীন মোর্চাই তাঁকে আর অনীত থাপাকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু পরে গুরুঙ্গ সে কথা অস্বীকার করেন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডেকে দু’জনকেই বহিষ্কার করেন। এক সময় গুরুঙ্গের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিনয়। কিন্তু নবান্ন বৈঠকের কিছু দিনের মধ্যে দু’জনের সাপে-নেউলে সম্পর্ক হয়ে যায়। গুরুঙ্গ সর্বত্র বিনয়ের বিরুদ্ধে ‘রাজ্যের হাতের পুতুল’ বলে অভিযোগ তুলে প্রচার করতে থাকেন।

এ দিন সেই সব প্রসঙ্গই তুলেছেন বিনয়। তিনি বলেন, ‘‘সাত মাস আগে আমি পাহাড়ের জন্য শান্তিপ্রক্রিয়ায় অংশ নিই। তখন বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরির মতো কয়েক জন লাগাতার ‘অডিও বার্তা’য় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেন। কখনও গোর্খাল্যান্ড বিরোধী, কখনও বিশ্বাসঘাতক, কখনও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতের পুতুল হয়ে ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছি বলে রটিয়েছে। সে সবই যে ভিত্তিহীন তা সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরে স্পষ্ট।’’

বিনয়ের মতে, দার্জিলিঙের উন্নতির স্বার্থে হিংসা ছেড়ে যে শান্তির পথ তিনি বেছে নিয়েছেন, সেটাই ঠিক। তিনি জানান, দার্জিলিঙের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাজ্য যে সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করেনি এবং গুরুঙ্গের পথ যে আইন-বিরোধী ছিল, সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের রায়ে তা প্রমাণিত হয়ে গেল।

বিনয়ের বক্তব্য, পাহাড়ের শান্তি এবং সমৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এ দিনের রায় প্রভাব ফেলবে। একই সঙ্গে গুরুঙ্গের অনুগামীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘‘এখনও যাঁরা ভুল বুঝে ওদের সমর্থনে রয়েছেন, তাঁদের বলছি, আসুন সকলে মিলে আরও দার্জিলিঙের উন্নয়নের জন্য কাজ করি।’’

পাহাড়ে রাজ্যের দমন পীড়নের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল বিরোধী দলগুলিও। এ দিন বিজেপির দার্জিলিঙের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরিন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। সুপ্রিম কোর্টের রায় ভাল করে পড়ে তিনি মন্তব্য করবেন বলে জানিয়েছেন। শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘কোনও মন্তব্য করছি না।’’

এই অবস্থায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই কট্টরপন্থীরা বিনয়ের দিকে পা বাড়াবেন। মোর্চার একটি সূত্রের দাবি, পাহাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গুরুঙ্গ অনুগামীরা অনেকেই বিনয় শিবিরের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। জিটিএ-র সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকের শেষে বিনয়ও বলেন, ‘‘এখন অনেক কাজ। দার্জিলিংকে আরও সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE