Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mask

সংসার চালাতে মাস্ক ফেরি কিশোর রনির

দিনহাটা-১ ব্লকের বড় আটিয়াবাড়ী দুই  গ্রাম পঞ্চায়েতের হেমন্টন বাজার এলাকায় রনিদের বাড়ি।

পথে-পথে: মাস্ক বিক্রি করতে ব্যস্ত রনি। নিজস্ব চিত্র

পথে-পথে: মাস্ক বিক্রি করতে ব্যস্ত রনি। নিজস্ব চিত্র

সুমন মণ্ডল
দিনহাটা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২০ ০৫:১০
Share: Save:

শিলিগুড়িতে দর্জির দোকানে কাজ করতেন রতন রায়। লকডাউনে কর্মহীন হয়েছেন। ফিরে এসেছেন দিনহাটায়। কোনও কাজ পাননি নতুন করে। তাই নিজেই বাড়িতে মাস্ক তৈরি করছেন। করোনার দিনে ‘অত্যাবশ্যক’ হয়ে ওঠা সেই মাস্ক এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে তাঁর কিশোর ছেলে রনি। মা গত হয়েছেন কয়েক বছর আগে। দুই ভাই আর বাবাকে নিয়ে সংসার। অভাবের সংসারে রনির স্নাতক পড়ুয়া দাদা টিউশনি করে। আর রাত জেগে বাবার তৈরি মাস্ক দিনের বেলা সাইকেলে ফেরি করে রনি।

দিনহাটা-১ ব্লকের বড় আটিয়াবাড়ী দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের হেমন্টন বাজার এলাকায় রনিদের বাড়ি। সোনিদেবী জৈন হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র রনি। করোনা আবহে গত মার্চ থেকে বন্ধ স্কুল। দাদা রাজ এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছে। রনির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ ফি মকুব করেছেন। এমনকি, সরকারের কাছে রাজের আবেদনের ভিত্তিতে কলেজে ভর্তির টাকাও লাগেনি। এতে অনেকটাই স্বস্তিতে ওদের বাবা রতন রায়। কিন্তু সংসার তো চালাতে হবে। তাই শিলিগুড়ি থেকে ফিরেই মাস্ক তৈরির কাজ শুরু করেন ঘরে বসেই। অনেক রাত জেগে কাজ করেন তিনি। এরপর সকাল হলেই সবুজ সাথী প্রকল্পে পাওয়া সাইকেলে নিয়ে বেরোয় রনি। দিনভর বিক্রির পর সামান্য যা আয় হয়, তুলে দেয় বাবার হাতে।

রতনবাবু বলেন, ‘‘রেশনে প্রতি মাসে চাল-গম পাওয়ায় অনেকটাই সুবিধা হয়েছে। জব কার্ড থাকলেও আজও কোনও কাজ পাইনি। এই সময় মাস্কের চাহিদা থাকায় বাড়িতেই রাতভর জেগে তৈরি করছি।’’ রনি জানায়, এতদিন শিলিগুড়ি থেকে বাবা তাদের খরচের টাকা পাঠাতেন। এখন তাদের বাবা কাজ হারিয়ে বাড়িতে ফিরে আসায় তারাও সমস্যায় পড়েছে।

বড় আটিয়াবাড়ী-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মকবুল হোসেন জানান, ওই পরিবারকে কোনও সহযোগিতা করা যায় কিনা তা তিনি অবশ্যই দেখবেন। দিনহাটা-১ ব্লকের বিডিও সৌভিক চন্দ জানান, ওই পরিবার যাতে সরকারি সাহায্য পায় তা দেখবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mask Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE