Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হোর্ডিংয়েও জোর টক্কর

নেতারা মুখে দ্বন্দ্ব ঢাকতে চাইলেও, তাঁদের টক্করে যে শহর ঢেকে গিয়েছে সে চিত্র দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন। শহরের লাইফলাইন সুনীতি রোডেই শতাধিক হোর্ডিং টাঙানো হয়েছে। আলোকস্তম্ভ তো বটেই, রাস্তার দু’পাশ থেকে শুরু করে সার্কিট হাউস, সেনা ব্যারাকের সামনেও টাঙানো হয়েছে হোর্ডিং।

পাশাপাশি: হোর্ডিং দু’পক্ষেরই। নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি: হোর্ডিং দু’পক্ষেরই। নিজস্ব চিত্র

কোচবিহার
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৩০
Share: Save:

কেউ উপরে তো কেউ নীচে। কোথাও আবার পাশাপাশি। হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ কোচবিহার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে যুব ও মূল তৃণমূলের দ্বন্দ্ব-যুদ্ধ এ বার হোর্ডিং নিয়ে। বিরোধীরা কটাক্ষ করে জানান, আসলে কে কতটা শক্তিশালী ‘নেতা’র সামনে পরখের এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না কেউই। অভিযোগ, তৃণমূলের লড়াইয়ে কোচবিহার শহর হোর্ডিং দিয়ে ঢাকা পড়ছে। এমনকি রাজ আমলের ঐতিহ্য ভবনের সামনেও তৃণমূলের হোর্ডিং টাঙানো হয়েছে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “তেমন কোনও ব্যাপার নেই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার প্রচার চলছে।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “তৃণমূলের শাখা সংগঠন যুব। আলাদা কিছু নেই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার সমর্থনে প্রচার চলছে। এখানে দ্বন্দ্বের কোনও ব্যাপার নেই।”

নেতারা মুখে দ্বন্দ্ব ঢাকতে চাইলেও, তাঁদের টক্করে যে শহর ঢেকে গিয়েছে সে চিত্র দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন। শহরের লাইফলাইন সুনীতি রোডেই শতাধিক হোর্ডিং টাঙানো হয়েছে। আলোকস্তম্ভ তো বটেই, রাস্তার দু’পাশ থেকে শুরু করে সার্কিট হাউস, সেনা ব্যারাকের সামনেও টাঙানো হয়েছে হোর্ডিং। বসেছে একাধিক তোরণ। একই অবস্থা রবীন্দ্রভবন থেকে শুরু করে এবিএন শীল কলেজের সামনের রাস্তার। মদনমোহন বাড়ি থেকে সাগরদিঘি পাড়ের চারদিকেও শুধু হোর্ডিং। বাদ যায়নি তোর্সা সেতু। রাজবাড়ির আশপাশেও হোর্ডিং। কোচবিহার শহরকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই হেরিটেজ ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হেরিটেজ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ দল ইতিমধ্যেই একাধিকবার শহরে ঘুরে গিয়েছেন। নানা প্রস্তাবও এনেছেন তাঁরা। তার মধ্যে ঐতিহ্য ভবনের সামনে থেকে হোর্ডিং সরানোর কথা বলা হয়। এখন সবই ঢাকা পড়েছে হোর্ডিংয়ে।

কোচবিহারে যুব ও তৃণমূলের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে তা ব্যাপক আকার নেয়। সংঘর্ষ, খুনজখমে রক্তাক্ত হয়েছে জেলা। এই অবস্থায় দলের তরফ থেকে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় অভিষেককে। দিন কয়েক আগে এক যুব নেতা নিশীথ প্রামাণিককে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই অবস্থায়, ৮ জানুয়ারি রাসমেলার মাঠে সভা করবেন অভিষেক। পর্যবেক্ষক হওয়ার পরে এই প্রথম তাঁর কোচবিহার সফর।

সেখান থেকে কী বার্তা দেন অভিষেক, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন কোচবিহার জেলার রাজ্যের শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। তাই নেতার সভার প্রচারে কেউ পিছিয়ে থাকতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলে এক নেতার কথায়, “এই প্রতিযোগিতার কোনও মানে হয় না। তবুও হচ্ছে। কেন হচ্ছে, সে খবর আছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। তিনিই ব্যবস্থা নেবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hoarding TMC TMCP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE