Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পিকের ফোনে ঘুম থেকে উঠে প্রচারে

বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে চা-বিস্কুট খাওয়া থেকে শুরু করে ওই বুথেই এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে রাত কাটালেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হবিবপুর শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৪৬
Share: Save:

দুপুরে খেয়ে ভাত ঘুম দিচ্ছিলেন। আচমকা বেজে উঠল মোবাইল ফোনের রিং। কে বলছেন? ফোনের ওপার থেকে উত্তর—“পিকের অফিস থেকে বলছি, আপনার হোয়াটসঅ্যাপটা দেখুন।” পাঁচ ব্যক্তির নাম, ফোন নম্বর সহ বুথের ফলাফলও দেওয়া রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। পিকের অফিস থেকে মেসেজ পাওয়ার মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে রবিবার দুপুরে হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডী বুথে পৌঁছে গেলেন ওই ব্লকের তৃণমূলের নেতা প্রভাস চৌধুরী।

বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে চা-বিস্কুট খাওয়া থেকে শুরু করে ওই বুথেই এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে রাত কাটালেন তিনি। তিনি বলেন, “পিকে এখন আমাদের কাছে খুব পরিচিত শব্দ। শনিবার দুপুরে নির্দেশ মতো গ্রামেই পৌঁছে মানুষদের অভাব-অভিযোগ শুনেছি। এরপরে আরও বুথে বুথে ঘুরব।”

তাঁর মতোই পিকের অফিস থেকে ফোন পেয়ে হবিবপুরের হরিশ্চন্দ্রপুর বুথে ছোটেন এই বিধানসভার পরাজিত প্রার্থী অমল কিস্কু। ‘দিদিকে বলো’ এবং জনসংযোগ যাত্রা সফল করতে হবিবপুর বিধানসভায় আসরে নামানো হয়েছে প্রভাস, অমলদের মতো জেলা পরিষদের বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ পিঙ্কি সরকার মাহাতোকেও।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের হবিবপুরে নজর পড়েছে পিকের। কারণ মালদহের মধ্যে এই ব্লকে দ্রুত প্রভাব বেড়েছে বিজেপির। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হবিবপুর বিধানসভার পাঁচটি জেলা পরিষদের আসনই বিজেপির দখলে। এ ছাড়া বিধানসভার দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি বিজেপি একক ভাবে দখল নিয়েছে। হবিবপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রায় ৩০ হাজার বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বিজেপির জোয়েল মুর্মু। উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু হবিবপুর বিধানসভায় ভোট পেয়েছেন ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৬৩০টি। তৃণমূল প্রার্থী মৌসম নুরের ঝুলিতে ছিল মাত্র ৫৩ হাজার ৭৮৪টি ভোট। তাই বিজেপিকে ঠেকাতে হবিবপুরে পিকে বেশি জোর দিচ্ছেন। প্রভাস, অমল, পিঙ্কিকে হবিবপুরের বিভিন্ন বুথে বুথে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রভাস বুলবুলচণ্ডী এবং আগরা হরিশ্চন্দ্রপুর বুথে গিয়ে জনসংযোগ যাত্রা করবেন। আর অমল ঘুরবেন হরিশ্চন্দ্রপুর এবং দাল্লাগ্রামে। পিঙ্কিকে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জগজ্জীবনপুর, বামনগ্রামে। দলের নির্দেশ মতো বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছেন নেতারা। রাস্তা, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, ঘর প্রকল্প, ভাতার বিষয়ে নেতাদের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন গ্রামের মানুষেরা।

প্রভাস বলেন, “গ্রামের মানুষদের দাবি দাওয়া আমরা কাগজে লিখে নিচ্ছি। তারপরে এক এক করে তা মেটানো হবে।” অমল বলেন, “ভোট প্রচার এবং জনসংযোগ যাত্রা দুটি একেবারে ভিন্ন অভিজ্ঞতা। ভোট প্রচারে গিয়ে আমরা মানুষের কাছে শুধু ভোটের কথাই বলে থাকি। এখানে আমরা মানুষের কথা শুনতে যাচ্ছি।”

যদিও হবিবপুরের মাটি থেকে তৃণমূল কোনও ফসল তুলতে পারবে না বলে কটাক্ষ করেছেন বিধায়ক বিজেপির জোয়েল। তিনি বলেন, “তৃণমূল সরকার মানুষের জন্য কিছুই করেনি। তাই মানুষ তাদের সঙ্গে নয়, আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Prashant Kishor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE