মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের দখল করা আরএসপি পার্টি অফিস এক বছর পর ফিরিয়ে দিল তৃণমূল। দল সূত্রে বলা হয়েছে, এটা সম্ভব হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যেই। তাঁর নির্দেশেই সোমবার তৃণমূল নেতা প্রসূন নার্জিনারি আরএসপি নেতাদের ডেকে ওই পার্টি অফিসের চাবি ফিরিয়ে দিয়েছেন। চাবি পেয়ে আরএসপি নেতা কর্মীরা দলীয় পতাকা লাগিয়ে পার্টি অফিসে বৈঠকও করলেন। ঘটনাটি ঘটেছে কুমারগ্রাম ব্লকের মারাখাতা গ্রামে।
এই ‘সৌজন্যের’ জন্য তৃণমূল নেত্রীকে নেতাদের ধন্যবাদ জানান আরএসপি নেতারা। তাঁদের কুমারগ্রাম জোনাল সম্পাদক দীপক দাস বলেন, ‘‘এক বছর আগে তৃণমূলের স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মী আমাদের পার্টি অফিসটি দখল করে নিজেদের পতাকা লাগিয়ে দেন। আমরা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং জেলা তৃণমূল নেতাদের কাছে লিখিত ভাবে পার্টি অফিস ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাই। মমতা জেলার নেতাদের দ্রুত পার্টি অফিস ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে মাঝে এক বছর সময় গড়িয়ে গেল।’’
তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী অবশ্য বলেন, ‘‘অন্য দলের পার্টি অফিস দখল করাকে সমর্থন করিনি। মারাখাতায় আরএসপি পার্টি অফিস দখলের ঘটনায় আমাদের দলের কিছু কর্মী জড়িত থাকার কথা জানিয়েছিলেন আরএসপি স্থানীয় নেতৃত্ব। যাঁরা এটা ঘটিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আরএসপির মারাখাতা শাখা সম্পাদক হৃদয় তিরকি ও লোকাল সম্পাদক সীতারাম লাকড়া স্থানীয় নেতা প্রমোদ ঠাকুর এবং যুব নেতা জয়ন্ত বর্মণরা বলেন, ‘‘সব রাজনৈতিক দলের নিজ নিজ মতামত প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে। তৃণমূল নেত্রী, জেলা নেতা এবং স্থানীয় নেতৃত্ব সেই ইচ্ছাকে সম্মান দিয়েছেন। সে জন্য তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’
বিরোধীদের একটি অংশ অবশ্য দাবি করছে, এর পিছনে রয়েছে বিজেপির উত্থান। বিশেষ করে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে গত লোকসভা ভোটে বিজেপির যে বাড়বাড়ন্ত দেখা দিয়েছে, তার ফলেই সুর নরম করতে হচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্বকে, বলছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, তাই এখানে সৌজন্যের কিছু নেই। বিরোধী নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, খোদ তৃণমূল নেত্রীই এখন বলছেন, বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও লড়াই নেই তাঁদের। সেটা বিজেপির চাপেই হয়েছে, দাবি তাঁদের। বিরোধীদের অভিযোগ, নিজেদের মাটি ফিরে পেতেই এখন বামেদের গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল। মুখে সৌজন্যের রাজনীতির কথা বলছে। বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির সদস্য বিপ্লব সরকার বলেন, ‘‘কুমারগ্রাম ব্লক জুড়ে বেশ কয়েকটি পার্টি অফিস তৃণমূল দখল করে। এটা তৃণমূলের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক সৌজন্যই যদি হয়, তবে পার্টি অফিস ফিরিয়ে দিতে এক বছর সময় লাগল কেন?’’ অন্য দিকে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ‘‘আমরা বরাবরই সৌজন্য করে এসেছি। সেটাই এ ক্ষেত্রেও করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy