Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বুনিয়াদপুরেও ঘাসফুল

স্বাভাবিক ভাবেই মুখে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছে বিজেপি। তাদের দাবি, সন্ত্রাস না হলে তারা আরও ভাল ফল করত। কিন্তু দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, বুনিয়াদপুরে দ্বিতীয় হয়ে ওঠা যথেষ্ট কৃতিত্বের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০১:৪৫
Share: Save:

জিতল তৃণমূল। তবে বিজেপি দেখিয়ে দিল, দ্বিতীয় স্থান নেওয়ার দৌড়ে তারা বাকি বিরোধীদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। এক কথায় এটাই হল দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর পুরভোটের ফলাফলের নির্যাস।

১৪ আসনের এই পুরসভাটি গঠিত হয়েছে গত বছর। এ বারেই ছিল এখানে প্রথম ভোট। সেখানে ১৩টি দখল করেছে তৃণমূল। বিজেপি জিতেছে একটিতে। তবে ভোট শতাংশের হারে শাসকদলের থেকে বিজেপি বিশেষ পিছিয়ে নেই। তৃণমূল পেয়েছে ৫২ শতাংশ ভোট, বিজেপি ৩০ শতাংশ। বামেরা এর মধ্যেই ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। কংগ্রেসের অবস্থা আরও খারাপ। ১৪টি ওয়ার্ডে মোট ভোটের হিসেবে তৃণমূলের বাক্সে পড়েছে ১১ হাজার ভোট। বিজেপির সংগ্রহ সেখানে প্রায় ৬ হাজার। সিপিএম পেয়েছে মাত্র ১৮৪১টি ভোট।

স্বাভাবিক ভাবেই মুখে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছে বিজেপি। তাদের দাবি, সন্ত্রাস না হলে তারা আরও ভাল ফল করত। কিন্তু দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, বুনিয়াদপুরে দ্বিতীয় হয়ে ওঠা যথেষ্ট কৃতিত্বের। বিশেষ করে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁদের তরুণ পাহান তৃণমূলের পলি পাহানকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন।

বামেদের দখলে থাকা বংশীহারির প্রায় গোটা শিবপুর মৌজা নিয়ে গঠিত বুনিয়াদপুর পুরসভা। তাই ধরে নেওয়া হয়েছিল, এ বারের ভোটে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমের। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে সিপিএম। শেষ মুহূর্তে তারা বিজেপির সঙ্গে হাত মেলায় বলে বুনিয়াদপুরের বাম শিবিরেরই অনেকে বলছেন।

ভোটের দিন একই অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রও। এ দিন ফল প্রকাশের পর বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের সঙ্গে মানুষ রয়েছেন। সেটা আবারও প্রমাণ হয়ে গেল। তবে বামেরা খাল কেটে বিজেপি নামক কুমির ডেকে এনে নিজেদের অস্তিত্ব মুছে দিল!’’ তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, বিজেপি ও সিপিএমের সমঝোতার ফল দেখা গিয়েছে ভোটবাক্সে।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেন, বুনিয়াদপুরে শাসক দল সন্ত্রাস করে জনমত লুঠ করেছে। অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে মানুষ জোট বেঁধে প্রতিবাদের চেষ্টা করেছিল। তাই যা হওয়ার হয়েছে।

বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকারের দাবি, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে শাসক দলের দুষ্কৃতীদের বুথ দখলের বিরুদ্ধে মানুষ তির-ধনুক নিয়ে জোটবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন বলে ছাপ্পা ভোট হয়নি। বাকি সর্বত্র এমনই অবাধ ভোট হলে জনমত তাঁদের দিকেই যেত, বলছেন শুভেন্দুবাবু।

বুনিয়াদপুরে প্রথম পুরসভা ভোটে জয়ের উৎসব বোর্ড গঠনের দিন হবে বলে জানিয়ে দলীয় কর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহয্যের নির্দেশ দেন তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লববাবু। সেই মতো এ দিন আবির উড়লেও সংযত ছিল তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE