Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

তুষার খুনে অবশেষে গ্রেফতার শম্ভু-সহ ২

তপসিখাতায় তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণ খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দলেরই উপপ্রধান শম্ভু রায়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। সেই সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয়েছে, পালিয়ে থাকা আরেক অভিযুক্ত বিদ্যুৎ রায়কেও। বুধবার গভীর রাতে ফালাকাটার একটি ধাবার সামনে থেকে দু’জনকে একসঙ্গে গ্রেফতার করে পুলিশ।

থানায় তুষার-খুনে ধৃতরা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

থানায় তুষার-খুনে ধৃতরা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৮
Share: Save:

তপসিখাতায় তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণ খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দলেরই উপপ্রধান শম্ভু রায়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। সেই সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয়েছে, পালিয়ে থাকা আরেক অভিযুক্ত বিদ্যুৎ রায়কেও। বুধবার গভীর রাতে ফালাকাটার একটি ধাবার সামনে থেকে দু’জনকে একসঙ্গে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে তুষার খুনে ব্যবহার করা আগ্নেয়াস্ত্রটি অবশ্য এখনও উদ্ধার হয়নি। বৃহস্পতিবার ধৃত দু’জনকে আটদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

২২ জানুয়ারি খুন হন তুষার। অভিযোগ, আলিপুরদুয়ারের তপসিখাতার জয় বাংলা হাটে স্থানীয় পরোরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শম্ভু রায় ও তার দলবল প্রথমে তাকে বেধড়ক মারধর করে৷ তারপর শম্ভু নিজেই কোমর থেকে রিভলভার বের করে তুষারের মাথায় গুলি চালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পরেই এক অভিযুক্ত, পরোরপাড় পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সোনা রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারলেও, বাকিরা পালিয়ে যায়। তা নিয়ে এলাকায় শুরু হয় লাগাতার আন্দোলন। স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন খোদ এলাকারই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা৷ শম্ভু-সহ অভিযুক্ত চারজনকেই দল থেকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল নেতারা।

গত রবিবার রাতে মালদহের কালিয়াচক থেকে অরবিন্দ বর্মণ নামে আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ কিন্তু শম্ভু ও বিদ্যুৎ এতদিন পুলিশের নাগালের বাইরে ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, এরই মধ্যে বুধবার রাতে তাদের কাছে খবর আসে ফালাকাটার একটি ধাবার সামনে এসেছে শম্ভু ও বিদ্যুৎ। দ্রুত আলিপুরদুয়ার ও ফালাকাটা থানার পুলিশ যৌথভাবে সেখানে ছুটে যায়৷ গভীর রাতে সেখান থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়৷

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে জেরায় তারা জেনেছে, তুষার খুনের পর শম্ভু ও বিদ্যুৎ একসঙ্গে কোচবিহারে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা শিলিগুড়ি যায়। উদ্দেশ্য ছিল নেপালে পালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু দার্জিলিং পুলিশ সতর্ক থাকায় তা তারা করতে পারেনি। এই অবস্থায় নেপালের বদলে ঠিক কোথায় তারা গা ঢাকা দিয়েছিল তা এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি পুলিশ খবর পায় শম্ভু ও বিদ্যুৎ ফের শিলিগুড়িতে ফিরে এসেছে৷ কোচবিহার দিয়ে অসমে পালানোর ছক কষছে তারা। কিন্তু টাকার জোগাড়ের জন্য বুধবার রাতে তারা ফালাকাটার ওই ধাবার কাছে আসে৷ সূত্র মারফৎ সেই খবর পেতেই আলিপুরদুয়ার ও ফালাকাটা থানার পুলিশ তাদের ধরে ফেলে৷ আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব জানিয়েছেন, “প্রাথমিক জেরায় শম্ভু স্বীকার করেছে যে সেই তুষারকে লক্ষ করে গুলি চালিয়েছে৷ হেফাজতে নেওয়ার পর গোটা ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হবে৷ খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে৷”

শম্ভুর ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছে তুষারের পরিবার৷ তুষারের জ্যাঠামশাই অরুণচন্দ্র রায় বলেন, “অবশেষে শম্ভু ধরা পড়ায় আমরা খুশি৷ ওর সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসিই হোক সেটাই আমরা সবাই চাই।” তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার ১ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই দোষীদের শাস্তি চেয়েছি। আইন আইনের পথে চলায় আমরা খুশি৷ আমরা মানুষের পাশে রয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE