জিপিএস প্রযুক্তিতে ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা দেওয়ার উদ্যোগ।
ফের ভূকম্পের পরে কোচবিহারে জিপিএস স্টেশন তৈরির ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ ও অসমের বিস্তীর্ণ এলাকার ভূগর্ভস্থ পাতের গতিবিধি ওপর নজরদারি চালাতে কোচবিহারে জিপিএস স্টেশন তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছে আগেই। জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জিপিএস স্টেশনটি গড়বেন। প্রশাসনের তরফে ভূমিকম্প প্রবণ কোচবিহারের সাগরদিঘির পাড়ে এ জন্য জমি দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে। সেই জমি সার্ভে কর্তাদের পছন্দ হয়েছে। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরেই স্টেশনের কাজ শুরু হওয়ার কথা। বুধবারের ভূমিকম্পের জেরে ওই ব্যাপারে দ্রুত কাজ শুরুর ব্যাপারে প্রশাসনের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। জিওলজিক্যাল সার্ভের ডিরেক্টর সন্দীপ সোম বলেন, “দ্রুত স্টেশন গড়তে কাজ শুরুর চেষ্টা হচ্ছে।”
বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক বছরে কোচবিহারে বেশ কয়েকবার কম্পন অনুভূত হয়। বুধবার সকালে কম্পনের তীব্রতা আগের কম্পনের অনেকগুলির চেয়েই বেশি ছিল। তাছাড়া কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা বা ‘জোন ফাইভের’ আওতাধীন রয়েছে। এ সব মিলিয়েই উদ্বেগ বেড়েছে। জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “এ বছরই ওই স্টেশনটির কাজ শুরুর আশা রয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সার্ভে কর্তারা সুইজারল্যান্ড থেকে অত্যাধুনিক মেশিন এনে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন স্টেশনটি গড়তে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার প্রকল্পের পরিল্পনার কথা জানান। কোচবিহারের স্টেশন থেকে ৩০০ কিমি এলাকাজুড়ে পাতের গতিবিধি দৈনিক নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে। স্বয়ংক্রিয় মেশিনের মাধ্যমে কলকাতার সদর দফতরে এলাকার ভূগর্ভস্থ পাতের ওঠানামার রোজকার যাবতীয় চিত্র পৌঁছে যাবে। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে অসমের বিস্তীর্ণ এলাকায় পাতের ওঠানামার ফারাক স্বাভাবিকের তুলনায় কতটা বেশি বা কম সেসব তথ্যও মিলবে। স্টেশনটি চালু হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী বাড়ি, বহুতল তৈরি, নগরায়ন পরিল্পনায় পরামর্শ দেওয়ার কাজে সুবিধে হবে। ক্ষতির আশঙ্কাও কমবে।
জিওলজিক্যাল সার্ভে সূত্রেই জানা গিয়েছে, নির্দিষ্টভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু পাতের গতিবিধি থেকে ভবিষ্যতের সম্ভাবনার আঁচ পাওয়া যেতে পারে। দেশ জুড়ে সেই লক্ষ্যে ৩৫টি এমন জিপিএস স্টেশন তৈরিতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কলকাতা-সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১৩টি কেন্দ্র চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ২২টি স্টেশন গড়ার প্রক্রিয়া হয়েছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে জিপিএস পদ্ধতিতে ইউরেশিয়, ভারতীয় পাতের দৈনন্দিন অবস্থা ধরা পড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy