ফেরা: উত্তরবঙ্গ সফরের শেষ কলকাতা ফেরার জন্য বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
কালিম্পঙের প্রশাসনিক সভায় গজলডোবা থেকে টাইগার হিলের মতো পর্যটন প্রকল্পের কাজের গতি, মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে ভর্ৎসনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এত ঢিমেতালে কাজ হচ্ছে সেই প্রশ্নও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলেই শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় ফিরেই মন্ত্রীকে ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। দফতরের অফিসারদের নিয়ে এক দফায় বৈঠক করেন। সেখানে গৌতমবাবুকেই বাড়তি উদ্যোগে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার বিমান ধরার আগে গজলডোবার পরিস্থিতির রিপোর্টও চান। সেই নির্দেশেই শুক্রবার সকালে গজলডোবা যান পর্যটনমন্ত্রী। প্রকল্পের কাজ পর্যালোচনা করে দুপুরে মন্ত্রী বাগডোগরা যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে পরিস্থিতির কথা জানিয়ে এসেছেন।
উত্তরকন্যার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে উত্তরবঙ্গের প্রকল্পগুলি নিয়ে অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন পর্যটনমন্ত্রী। আজ, শনিবার গজলডোবায় যাবেন দফতরের প্রধান সচিব অত্রি ভট্টাচার্যও। ঠিক হয়েছে, গৌতমবাবুর প্রতি সপ্তাহে আর জলপাইগুড়ির জেলাশাসক ১৫ দিন অন্তর গজলডোবা নিয়ে বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে রিপোর্ট জমা দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী পর্যটনমন্ত্রীকে বলেছেন, কাজে হাত দিয়ে শুধু বসে থাকলে চলবে না। টেন্ডার, ওয়ার্ক অর্ডার হওয়ার পর তা মন্ত্রীকেই নিয়মিত নজরদারি করতে হবে। গজলডোবার ক্ষেত্রে তা ঠিকঠাক হচ্ছে না বলেই মুখ্যমন্ত্রীর মনে হয়েছে।
গৌতমবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। উত্তরকন্যায় উনি আমাকে পাহাড়-সমতলের প্রকল্পগুলি দ্রুত শেষ করার জন্য বলেছেন। কিছু নির্দেশও দিয়েছেন। এবার সেই মতোই কাজ হবে।’’ মন্ত্রী জানান, গজলডোবার কটেজ, অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস, রাস্তা, সেতু, পাম্প হাউস-সহ বিভিন্ন কাজ এদিন দেখে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দুপুরের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানিয়েছি। কাজে আর কোনও ঢিলেমি আমরাও বরদাস্থ করব না।’’
গত ২০১৩ সালে গজলডোবার তিস্তা ক্যানেল, ব্যারাজের ধারে ২০৮ একর জমিতে মেগা ট্যুরিজম প্রকল্পের ঘোষণা করে সরকার। প্রাথমিকভাবে পরিকাঠামো তৈরির জন্য ৩০০ কোটি টাকা খরচের কথা বলা হয়। কাজ শুরু হলেও পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নিয়ে দীর্ঘদিন টালবাহানা হয়েছে। কাজ শুরু হলেও বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের কাজের জন্য কিছুটা পিছিয়ে যায়। শহর থেকে অন্তত ২৫ কিলোমিটার দূরের প্রকল্প নিয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলিও প্রথমে উৎসাহ দেখায়নি।
শেষে পর্যটন দফতর নিজেই কটেজ, হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউশন, যুব আবাস-সহ পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করেছে। এর পরেই তিনটি বেসরকারি হোটেল, রিসর্ট সংস্থা এলাকায় বিনিয়োগের ঘোষণা করে। কিন্তু বাস্তবে কাজ ঠিকমতো না চলায় মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy