Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

ফেরা হচ্ছে না বাড়ি

হায়দরাবাদের বাসিন্দা রাজেন্দ্র প্রসাদ কালিম্পঙে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি বাড়ি গিয়েছিলেন। এ দিন কালিম্পঙে ফেরার জন্য শিলিগুড়িতে পৌঁছে স্ত্রী, কোলের শিশুকে নিয়ে আটকে পড়েছেন গাড়ি না-মেলায়।

কড়া প্রহরা দার্জিলিং চকবাজারে। ছবি: সন্দীপ পাল

কড়া প্রহরা দার্জিলিং চকবাজারে। ছবি: সন্দীপ পাল

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

মুম্বইতে সেনাবাহিনীর কাজে যুক্ত দার্জিলিঙের বাসিন্দা কুমার থাপা। ৬ দিনের ছুটি। বাড়িতে যাবেন বলে গত শনিবার শিলিগুড়িতে পৌঁছেছেন। কিন্তু পাহাড়ে যেতে সরকারি বাসের জন্য দু’দিন তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে অপেক্ষা করেও কোনও গাড়ি না-মেলায় যেতে পারেননি। এ দিকে ছুটিও শেষ হয়ে আসছে।

হায়দরাবাদের বাসিন্দা রাজেন্দ্র প্রসাদ কালিম্পঙে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি বাড়ি গিয়েছিলেন। এ দিন কালিম্পঙে ফেরার জন্য শিলিগুড়িতে পৌঁছে স্ত্রী, কোলের শিশুকে নিয়ে আটকে পড়েছেন গাড়ি না-মেলায়।

পাহাড়ে গত কয়েক দিন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির জেরে গাড়ি চলাচল করছে না। মোর্চা পাহাড় ছাড়তে বলার পরে পর্যটকেরা অধিকাংশই নেমে গিয়েছেন। তারপরে লাগাতার বন্‌ধের ডাকে বেসরকারি গাড়ির মালিকেরা ছোট গাড়ি, বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। সরকারি বাসও দু’দিন ধরে মিলছে না দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক যেতে-আসতে। রবিবার শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ে যেতে পারেননি অনেকেই। অন্তত জনা ৩০ যাত্রী দার্জিলিং-কালিম্পং যাবেন বলে বাস টার্মিনাসে এসেছিলেন। দিনভর অপেক্ষা, গাড়ি নেই। তাই বাসস্ট্যান্ডে বসেই অনেকে খাওয়াদাওয়া সেরেছেন।

উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার শিলিগুড়ি ডিপোর ডিভিশনাল ম্যানেজার বিকাশ দাস জানান, পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে গত কয়েক দিনে তাঁদের ২টি বাস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক চালককে মারধর করা হয়েছে। পাহাড়ে গাড়ি নিয়ে যেতে কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে গাড়ি পৌঁছে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। তবে এদিন পুলিশ এসকর্ট দিতে পারবে না বলে জানায়।’’ তাই বেলা বাড়তেই জানিয়ে দেওয়া হয় এ দিন কোনও গাড়ি পাহাড়ে চালানো সম্ভব নয়।

পরিবহণ ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তি, গাড়ির চালকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চিন্তিত। গ্যাংটকের কিছু গাড়ি চললেও সেই সংখ্যাও কমে গিয়েছে। ফের পাহাড়ে গোলমালের আশঙ্কা সব সময়ই তাড়া করছে। বেসরকারি গাড়ির স্ট্যান্ডের কয়েকজন জানান, এই পরিস্থিতিতে গাড়িতে ভাঙচুর, আগুন জ্বালিয়ে দিলে ক্ষতিপূরণ কে দেবে?

পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা দিয়ে সরকারি বাস পৌঁছে দেওয়ার কথা ভাবা হলেও এদিন সম্ভব হয়নি। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন বা বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমেও পাহাড়ে যেতে গাড়ি পাননি অনেকে। ভীম গিরি, নিমা তামাঙ্গ, বিবেক ঠাকুররা দার্জিলিং, কালিম্পঙে যাওয়ার গাড়ি না-পেয়ে হতাশ। বলেন, ‘‘কবে পাহাড়ে যেতে পারব সেটাই অনিশ্চিয় হয়ে পড়েছে। যারা আন্দোলন করছেন বা প্রশাসনে রয়েছেন বাসিন্দাদের দুর্ভোগের বিষয়টি সকলেরই ভাবা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE