চলতি সপ্তাহে লাইসেন্স, পারমিট ছাড়া টোটো চলাচল রুখতে ধরপাকড় ও মামলা দায়ের শুরু করেছিল শিলিগুড়ি পুলিশ। শহরের বড় রাস্তাগুলি থেকে বহু টোটো আটকও করা হয়। এতে পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুমকিও দেন আইএনটিটিইউসি-র নেতারা। অভিযানের গোড়ায় শাসক দলের ‘চাপে’ পড়ে পিছুও হঠে পুলিশ। আজ, শুক্রবার অবধি অভিযান বন্ধও রাখা হয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন এবং পরিবহণ বোর্ডে থাকা তৃণমূল নেতারা শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার সঙ্গে দেখা করে জানালেন, পরিবহণ দফতর দ্রুত টোটোর রেজিস্ট্রেশন এবং লাইসেন্সের ব্যবস্থা করছে। তাই তত দিন পুলিশ অভিযান বন্ধ রাখা হোক। তা না হলে টোটো চালকেরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতেও পারেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসেই কেন্দ্রীয় আইন মেনে রাজ্য সরকারের নির্দেশে টোটো চলতে গেলে রেজিস্ট্রেশন এবং পারমিট নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুলিশ সে নির্দেশ মেনেই ধরপাকড় শুরু করে। তাদের একাংশের প্রশ্ন, সরকারি আইন মেনে টোটোর রেজিস্ট্রেশন এখনও না শুরু হওয়াতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। শাসক দলের নেতারা সেইদিকে আগেই নজর দিলে সমস্যা থাকার কথা ছিল না। আজ, শুক্রবার শিলিগুড়ির ট্রাফিক পুলিশ নিয়ে কমিশনারেটে বৈঠক রয়েছে পুলিশ কমিশনারেরা। সেখানেই টোটো নিয়ে কী করা হবে তা ঠিক করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশ কমিশনার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেননি। তবে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যাম সিংহ শুধু বলেছেন, ‘‘আমরা সরকারি নির্দেশ মেনেই অভিযান করছি। কোথাও বেআইনিভাবে টোটো চলাচল করতে দেখা গেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’
ইতিমধ্যে মহকুমায় পাঁচ হাজারের বেশি টোটো রাস্তায় নেমে পড়েছে। তাঁদের একটি বড় অংশ শাসক দলের সংগঠনে নাম লিখিয়েছেন। পুরভোটের পর শহরের নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষ টোটোর বৈধতা দেওয়ার দাবি তোলার পর বামফ্রন্টের পক্ষে অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকার তা সর্মথন করেছেন। এতে পুলিশি ধরপাকড়ের সময় টোটো চালকদের পাশে না দাঁড়ালে সংগঠন ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে তৃণমূল নেতাদের। এ দিন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূলের জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিবহণ বোর্ড সদস্য মদন ভট্টাচার্য, আইএটিটিউসি-র জেলা সভাপতি অরূপরতন ঘোষ-সহ একাধিক নেতা। মদনবাবু বলেন, ‘‘এ বার দ্রুত প্রক্রিয়া শুরু হবে। তাই পুলিশকে টোটো চালকদের ধরপাকড় না করতে বলা হয়েছে।’’ তিনি জানান, জেলা পরিবহণ বোর্ডের তরফে এপ্রিল মাসের শেষে শহর এবং গ্রামের টোটোর রুট নিয়ে সমীক্ষা করে রুটও ঠিক করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে ফের বৈঠক হবে। সেখানে আলোচনা হবে। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অরূপরতন ঘোষ বলেন, ‘‘সংগঠন গড়া বা বাঁচানোর মত বিষয় নেই, দুঃস্থ বেকার ছেলেরা টোটো চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। তাঁদের যাতে হয়রানি না হয় সেটা তো আমাদের দেখা দায়িত্ব।’’
গত অক্টোবরে কেন্দ্র টোটো বা ই-রিকশা, ই-কার্টের বৈধতা নিয়ে নির্দেশিকা জারি করে। ফেব্রুয়ারিতে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে জাতীয় ও রাজ্য সড়ক বাদ দিয়ে বাস, অটোর বিকল্প পরিবহণ ব্যবস্থা হিসেবে পাড়ার রাস্তায় টোটো চলার কথা বলা হয়। কিন্তু বড় রাস্তায় টোটো চলায় অভিযানে নামে পুলিশ। টোটোচালকদের দাবি, পরিবহণ দফতর, প্রশাসন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু না করাতেই সমস্যা বেড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy