উত্তেজনা: মণ্ডলঘাটে বোর্ড তৈরিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে চরম বাদানুবাদ স্থানীয়দের। ছবি: সন্দীপ পাল
এক দিকে বোর্ডগঠন নিয়ে ঝুলে রইল প্রশ্ন চিহ্ন। তেমনই পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের ক্ষোভ নিয়েও উঠল প্রশ্ন। শুক্রবার জলপাইগুড়ির মণ্ডলঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ডগঠন স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর এমনই অনেক প্রশ্নই অস্বস্তিতে ফেলেছে শাসক দলকে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মণ্ডলঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৬টি আসনের মধ্যে নয়টি আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল শাসকদল। বোর্ড গঠনে কোনও বাধা ছিল না। তাও সরকারি ভাবে দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পরও বোর্ডগঠন হল না শুক্রবার। ঝুলে রইল ভবিষ্যৎ। কারণ হিসেবে উঠে আসছে সেই পুরনো ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’। পুরনো এক তৃণমূল কর্মী তথা এ বারের নির্বাচিত এক পঞ্চায়েত সদস্যকে প্রধান করতে হবে এই দাবি দলের একাংশের। প্রদীপবাবু জলপাইগুড়ি যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অন্য দিকে জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী ঘনিষ্ঠ অন্য গোষ্ঠীর ছয় জন পঞ্চায়েত সদস্য এর বিরোধিতা করেন বলে দাবি। এই ফাঁকে আসরে ঢুকে পড়ে সিপিএম। তারা অবস্থার সুযোগ নিয়ে বোর্ড গঠনের চেষ্টা করে বলে দাবি। সঙ্গী করে কংগ্রেস এবং নির্দল প্রার্থীদের। তবে সিপিএম ও কংগ্রেস এই বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
গতকাল থেকেই এই চাপানউতোর চলছিল। শুক্রবার বোর্ড গঠনের জন্য পঞ্চায়েত অফিসে আসেন তিন তৃণমূল সদস্য। তিন জন সিপিএম সদস্য, দু’জন নির্দল এবং দুই কংগ্রেস সদস্যও আসেন। কিন্তু তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর ছয় সদস্য এ দিন অনুপস্থিত ছিলেন। সিপিএম সহ বিরোধীদের নিয়ে বোর্ড গঠনের চেষ্টা হয় বলে দাবি। উত্তেজনা বাড়তে থাকে। পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে তৃণমূল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে আসেন ডিএসপি হেড কোয়ার্টার প্রদীপ সরকার।
অসুস্থ প্রিসাইডিং অফিসারকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে উপস্থিত জনতা। অভিযোগ, ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সহ অন্য পুলিশ কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান পুলিশকর্মীরা। এরপর ওই অসুস্থ প্রিসাইডিং অফিসারকে সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরেও বিক্ষোভ চলে। এলাকায় এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে। কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানিয়েছেন, ‘‘তেমন বড় কিছু ঘটেনি। সব খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ দীপমবাবু বেলাকোবা হাসপাতালে ভর্তি। রক্তচাপ বেড়ে যাওয়াতেই
তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দল যাকে মনোনীত করবে তিনিই প্রধানের চেয়ারে বসবেন। আর যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ব্যাপার নেই। কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy