খবর উড়ে আসে বাসন্তী পুজোর দশমী উপলক্ষে শিথিল করা হবে কাঁটাতারের বেড়া। সেই শুনে, ওপারের আত্মীয়কে একটু চোখের-দেখা দেখার আশায় সকাল থেকেই কাঁটাতারের বেড়ার এপারে কাতারে কাতারে ভিড় জমান পাহাড়পুরের মধু দেবনাথ, শঙ্করী মালাকার, আশারু বর্মনেরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে রটে যাওয়া এই খবরে মানুষের ঢল সামাল দিতে সোমবার দুপুরে রীতি মতো বেগ পেতে হল বিএসএফকে।
পাহাড়পুর গ্রামের ওপারে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সাপাহার গ্রাম। এই গ্রামেই এ দিন বাসন্তী পুজোর দশমীর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই উপলক্ষে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া শিথিল করা হবে বলে খবর রটে যায়। তাতে বিশ্বাস করে ওপারের বাসিন্দা আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন এই আশা নিয়ে দলে দলে পাহাড়পুরে জড়ো হতে থাকেন লোকজন। দুপুরের পর ব্যাপক মানুষের সমাবেশ ঘটতেই বিএসএফ এবং বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের তরফে সতর্কতা জারি হয়। হাজার মানুষের ভিড় দেখে কাঁটাতারের বেড়ার আগেই লোকজনকে আটকে দেওয়া হয়। তাতে মানুষের আশা ভেঙে যায়।
প্রতিবারের মতো বাসন্তী পুজোর দশমীর মেলায় এসে কাঁটাতারের বেড়া থেকে দু’দেশের মানুষ আত্মীয়দের সঙ্গে দূর থেকেই মনের কথা দেওয়া-নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি। এ বারে মেলা উপলক্ষে কাঁটাতারের দুপারেই রটে যায় সীমান্ত শিথিল করা হবে।
সেই গুজব দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে মানুষ পাহাড়পুর সীমান্তে ছুটতে থাকেন। হরিবংশীপুর, শ্রীবই, ভারিলা এলাকার কৃষিজীবী বীরেশ্বর বর্মন, ছোটন রায়েদের কথায়, ‘‘সাধারণ ভাবে ওপারের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব হয় না। তবে মেলা অনুষ্ঠানে অনেক সময় সেই সুযোগ ঘটে যায়।’’ সকালের দিকে কাঁটাতারের দিকে যাতায়াত অবাধ থাকলেও ভিড় বাড়তে থাকায় দুপুরের পরে সীমান্ত সড়কেই এপারের বাসিন্দাদের আটকে দেয় বিএসএফ। পাশাপাশি বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডও সতর্ক ছিল।
এক বিএসএফ অফিসারের কথায়, ‘‘মেলা উপলক্ষে উভয় দেশের বাসিন্দাদের মিলিত হওয়ার ব্যবস্থার কোনও উপায়ই নেই। গুজবের জেরে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে জড়ো হয়েছিলেন। সকলকে বুঝিয়ে বিকেল নাগাদ ফেরত পাঠানো হয়।’’ এ দিন উভয় সীমান্তের বিধিনিষেধে দুই বাংলার বাসিন্দারা মিলিত হতে পারেননি। তবে তাঁদের আবেগে এ দিন ফের অমলিন আত্মীয়তার টান জেগে উঠল কাঁটাতারের বেড়ার দু’দিকের দুই গ্রাম—পাহাড়পুর এবং সাপাহারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy