Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Dead

ট্রাক টেনে তুলতেই বেরিয়ে এল দেহ

পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া মৃত যুবকের নাম সইদুল শেখ(১৮)। তিনি ঝাড়খন্ডের সাহেবগঞ্জের উদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

উদ্ধারকাজ: মানিকচকে গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া ট্রাক উদ্ধারের কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধারকাজ: মানিকচকে গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া ট্রাক উদ্ধারের কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা 
মানিকচক শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৮:২৪
Share: Save:

বুধবার সকাল ৮টা। মালদহের মানিকচকের গঙ্গাপাড়ে ফরাক্কা থেকে তখন আনা হয়েছে উন্নত মানের ক্রেন। ডুবুরি ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর টানা চার ঘন্টার চেষ্টায় দুপুর ১২টা নাগাদ খোঁজ মেলে গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া একটি ট্রাকের। ট্রাকটি টেনে তুলতেই চালকের পাশের কেবিনের পাশে দেখা যায় এক যুবকের নিথর দেহ। ট্রাকের একাংশ ভেঙে দেহ বের করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া মৃত যুবকের নাম সইদুল শেখ(১৮)। তিনি ঝাড়খন্ডের সাহেবগঞ্জের উদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ওই ট্রাকে তিনি সহকারি চালকের কাজ করতেন। নিখোঁজের তালিকায় সইদুলের নাম ছিল বলে দাবি পুলিশের। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “নিখোঁজদের মধ্যে তিন জনের নাম পাওয়া গিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে সইদুল ওরফে ময়নার নাম ছিল। এ দিন তাঁরই দেহ উদ্ধার হয়েছে।”

দেহ উদ্ধার হতেই এ দিন কান্নায় ভেঙে পড়ে মৃতের পরিবারের লোকেরা। মৃতের কাকা আজাহার হোসেন বলেন, “সোমবার সকালে বাড়ি থেকে ভাইপো বের হয়েছিল। লঞ্চ দুর্ঘটনায় খবর পাওয়ার পর থেকে গঙ্গাপাড়েই আমাদের দিন কাটছিল। ভাইপোকে এ রকম অবস্থায় বাড়ি নিয়ে যেতে হবে তা কখনও ভাবতে পারিনি।” এরই মধ্যে এ দিন আরবিয়াবিবি নামে এক মহিলা জানান, তাঁর ভাই মন্টু শেখেরও এখন খোঁজ মেলেনি। তিনি বলেন, “ভাইয়ের এখনও খোঁজ পাইনি। উদ্ধারের কাজে গতি আরও বাড়ানো উচিত।”

সোমবার রাত সাতটা নাগাদ ঝাড়খন্ডের রাজমহল থেকে আসা ট্রাক বোঝাই লঞ্চটি পাড়ে পৌঁছতেই রেলিং ভেঙে পাথর বোঝাই আটটি ট্রাক পরপর গঙ্গায় তলিয়ে যায়। সেই ট্রাকগুলিতে চালক, সহকারি চালক মিলিয়ে মোট ১৬ জন ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। পুলিশ ও স্থানীয়দের তৎপরতায় তাঁদের মধ্যে অধিকাংশকে রাতেই উদ্ধার করা হয়। তবে অনেকেরই খোঁজ মিলছে না বলে দাবি স্থানীয়দের। প্রথমে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর পরে কল্যাণী থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এসে উদ্ধারের কাজ শুরু করে। জল থেকে ট্রাকগুলি তুলতে ক্রেনের লোহার তার বারবার করে ছিঁড়ে যাওয়ায় কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হয় উদ্ধারকারী দলকে।

এ দিন ফরাক্কা থেকে ক্রেন আনার পরই উদ্ধারকার্যে গতি আসে। আরও দুটি ট্রাক উদ্ধার হয়। তবে এখনও বেশ কিছু ট্রাকের খোঁজ মেলেনি। এরই মধ্যে, গঙ্গাপাড়ে পাড়ে ভিড় জমান উদ্বিগ্ন মানুষ। উদ্ধারের কাজ ধীর গতিতে চলছে বলে দাবি করে সরব হন উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি বলেন, “প্রশাসনের উচিত দ্রুতগতিতে উদ্ধারের কাজ করা। প্রয়োজন সেনা নামানো উচিত।” মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “দুর্ঘটনাস্থলে গঙ্গার গভীরতা প্রায় ৪০ ফুট। তাই উদ্ধারকার্যে সমস্যা হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে তৎপরতার সঙ্গে কাজ চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

truck recovered from river Manikchak Dead
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE