Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সদ্যোজাতের মৃত্যু, বিক্ষোভ

পুলিশ জানিয়েছে, প্রসব বেদনা শুরু হওয়ায় উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার গোরাহার এলাকার বাসিন্দা সাথী দাসকে মঙ্গলবার দুপুরে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

এক সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হল রায়গঞ্জের একটি নার্সিংহোম। ওই শিশুর পরিজনরা পূর্বাশাপাড়ার ওই নার্সিংহোমের গেট বাইরে থেকে আটকে দিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

রায়গঞ্জ থানার আইসি অভিজিত সরকার বলেন, ‘‘সদ্যোজাতের মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, প্রসব বেদনা শুরু হওয়ায় উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার গোরাহার এলাকার বাসিন্দা সাথী দাসকে মঙ্গলবার দুপুরে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি।

শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ সাথী নার্সিংহোমের শয্যায় ঘুমিয়ে ছিলেন। সেই সময় তাঁর পরিবারের লোকজন নার্সিংহোমে গিয়ে জানতে পারেন সদ্যোজাতটির মৃত্যু হয়েছে। সাথীর স্বামী পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী পরিমলবাবুর দাবি, কীভাবে তাঁর পুত্রসন্তানের মৃত্যু হল সেই বিষয়ে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁদের কোনও ব্যাখ্যা দেননি। তিনি বলেন, ‘‘রাতে পুত্রসন্তান অসুস্থ হয়ে পড়লেও কোনও চিকিৎসক তাকে দেখতে যায়নি। ঘটনাস্থলে ছিল না কোনও নার্স বা আয়া। পুত্রসন্তান সঠিক সময়ে চিকিত্সা পেলে ওকে মরতে হত না। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্যই ছেলেকে হারালাম। পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছি।’’ পুলিশের দাবি, অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই পুলিশ ওই নার্সিংহোমের ম্যানেজার ও এক আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঠিক কী কারণে ওইদিন ওই সদ্যোজাতের মৃত্যু হল, সেই বিষয়ে জানার চেষ্টা করছে।

নার্সিংহোমের প্রধান উপদেষ্টা তথা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নারায়ণচন্দ্র পালের দাবি, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ওই প্রসূতি। তখনই শ্বাসরূদ্ধ হয়ে শিশুটি মারা যায়।’’ যদিও পরিমলবাবুর দাবি, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ দু’দিনের সদ্যোজাতকে রাতে কখনই মায়ের পাশে রাখতে পারেন না। দুধ খাওয়াতে হলে নার্সিংহোমের আয়াদের নজরদারিতেই তা খাওয়ানো হয়। তাই নার্সিংহোম হাজার যুক্তি খাঁড়া করলেও গাফিলতি এড়াতে পারবে না।

নারায়ণবাবুর দাবি, ‘‘চিকিত্সা শাস্ত্র অনুযায়ী সদ্যোজাতকে মায়ের সঙ্গে রাখারই নিয়ম। তা না করলে শরীরের তাপমাত্রা কমে গিয়ে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবুও অনেকক্ষেত্রে সদ্যোজাতকে মায়ের থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে নার্সিংহোম ঠিক কাজই করেছে। ওই প্রসূতি ঘুমিয়ে পড়ার কারণেই সদ্যোজাতটির মৃত্যু হয়েছে।’’

পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়, শ্বাসনালীতে দুধ আটকে বা শ্বাসরুদ্ধ হয়েই ওই সদ্যোজাতর মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Newborn Death Turmoil সদ্যোজাত
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE