Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mass Wedding

গণবিবাহের অনুষ্ঠান নিয়ে ‘লড়াই’

অনুমতি না থাকার অভিযোগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) শাখা সংগঠনের সোমবারের গণবিবাহ অনুষ্ঠান রবিবারই বাতিল করে পুলিশ।

আয়োজন: মাঝেরডাবরি এলাকায় একটি গণবিবাহের আসরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদ্ুল গোস্বামী। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

আয়োজন: মাঝেরডাবরি এলাকায় একটি গণবিবাহের আসরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদ্ুল গোস্বামী। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:২২
Share: Save:

গণবিবাহের আয়োজন ঘিরে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে।

অনুমতি না থাকার অভিযোগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) শাখা সংগঠনের সোমবারের গণবিবাহ অনুষ্ঠান রবিবারই বাতিল করে পুলিশ। স্থানীয় বিএম ক্লাবে ওই অনুষ্ঠানের কথা ছিল। পুলিশের বাধার পর দুর্গাবাড়ি মন্দিরে অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিল আয়োজকেরা। কিন্তু সেখানেও মন্দির কর্তৃপক্ষের অনুমতি মেলেনি। পাশাপাশি, এ দিনই জেলার একাধিক জায়গায় গণবিবাহের আয়োজন করে তৃণমূল। বিজেপির অভিযোগ, বিএম ক্লাবের অনুষ্ঠানে নথিভুক্ত পাত্রপাত্রীদের তুলে নিয়ে গিয়ে গণবিবাহের আয়োজন করেছে তৃণমূল। ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

বিজেপির ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে বিএম ক্লাব ময়দানে এই গণবিবাহ হওয়ার কথা ছিল। উদ্যোক্তা আলিপুরদুয়ার গণবিবাহ সমিতি। সহযোগী হিসেবে ছিল ভিএইচপির একটি সংগঠনও। বিজেপি সূত্রের খবর, গণবিবাহ সমিতির সঙ্গে দলের বেশ কিছু নেতা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। কিন্তু অনুমতি ছাড়া এই গণবিবাহের আয়োজন ও এই অনুষ্ঠান নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগে রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশের তরফে বিএম ক্লাব ময়দানে প্যান্ডেল খুলে দেওয়া হয়। বিকল্প হিসাবে দুর্গাবাড়ি মন্দিরে বিয়ের আয়োজন করতে রবিবার রাতেই সেখানে যোগাযোগ করেছিলেন উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ। কিন্তু মন্দিরের তরফে অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে কার্যত রণে ভঙ্গ দেন উদ্যোক্তারা। এরপর সোমবার কার্যত ভোরবেলা থেকেই বিএম ক্লাব ময়দান কার্যত দখল নিয়ে নেয় পুলিশ। মাঠে প্রচুর পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি দু’দিকে রাস্তায় লোহার ব্যারিকেড দিয়ে দেওয়া হয়। আলিপুরদুয়ার চৌপথি এলাকাতেও প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘একে তো বিএম ক্লাব ময়দানে এ দিনের গণবিবাহের কোনও অনুমতি ছিল না। তার উপর কিছু মানুষকে জোর করে সেখানে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। তাই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে।’’

তবে এ দিন মাঝেরডাবরি, হাতিপোতা, তুরতুরি ও মথুরায় গণবিবাহের আয়োজন হয় তৃণমূলের তরফে। এ নিয়ে বিএম ক্লাবের অনুষ্ঠানের আয়োজক ও বিজেপির সরাসরি অভিযোগ, তৃণমূল তাদের অনুষ্ঠানের জন্য নথিভুক্ত পাত্রপাত্রীদের তুলে নিয়ে গিয়েছে। গণবিবাহ সমিতির সভাপতি রতন তরফদারের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ার-১ ও ২ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ সেই পাত্রপাত্রীদের গাড়ি আটকে দেয়। এরপর অনুমতি ছাড়াই রাতারাতি একাধিক জায়গায় গণবিবাহের আয়োজন করা হয়। মাঝেরডাবরির অনুষ্ঠান ঘিরে শুরুর দিকে খানিকটা উত্তেজনাও ছড়িয়েছিল। তবে পুলিশ গিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘এ রাজ্যে তৃণমূলের জন্য একরকম আইন, আর বিরোধীদের জন্য যে তা অন্যরকম সেটা ফের একবার মানুষ দেখলেন। ভবিষ্যতে আমরাও দেখব।’’ এ দিনের একাধিক গণবিবাহের আসরে উপস্থিত তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘আমাদের দল সাতদিন আগে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই বিয়ের আয়োজন করেছে। স্বেচ্ছায় যাঁরা এসেছেন, তাঁদেরই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mass Wedding BJP TMC Alipurduar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE