ভোগান্তি: জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভিড়। নিজস্ব চিত্র
সকাল প্রায় সাড়ে আটটা থেকে ঠায় লাইনে দাঁড়িয়ে ধূপগুড়ির নাথুয়ার বাসিন্দা আরিফা খাতুন ও তাঁর স্বামী মহম্মদ হামিদুল হক। আরিফার কোলে রয়েছে জ্বরে ভোগা তাঁর সাড়ে তিন বছরের ছেলে রেহান। ঘড়িতে তখন বেলা পৌনে একটা, বিভাগে ঢুকলেন চিকিৎসক। কয়েকঘণ্টা টানা দাঁড়িয়ে ততক্ষণে নাজেহাল শিশু ও তাদের অভিভাবকেরা। সোমবার জলপাইগু়ড়ি জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে দেখা গেল এমনই ছবি। অভিভাবকদের দাবি, সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই শিশু বিভাগের আউটডোরের চিকিৎসকদের দেখা সব সময় মেলে না।
মহম্মদ হামিদুল হক বলেন, ‘‘সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে। একবার বলা হলো ওয়ার্ডে যেতে হবে। আবার ওখান থেকে আউটডোরে পাঠানো হলো। দুপুর একটা বেজে গেছে। জানি না কখন দেখবেন ডাক্তারবাবু।’’ দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন হাসিনা বানু, সাবিত্রী মণ্ডলও। তাঁদেরও অভিযোগ, প্রায়শই এখানে এসে আমাদের হয়রানি হচ্ছে।’’
এ দিন বিভাগে ঢোকার সময় চিকিৎসক ব্রতীনশঙ্কর পালকে কয়েকজন দেরি হওয়ায় ভোগান্তির কথা বলতেই রেগে যান তিনি। বলেন, ‘‘আরে মশাই সকাল থেকেই তো আউটডোর সামলাতে হচ্ছে। এখন আবার ওয়ার্ডেও যেতে হয়েছিল রোগী দেখতে। সব দিক সামলাতে হয় আমাদের।’’ এই বিষয়ে হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত এক জন চিকিৎসকের আউটডোর সামলানোর কথা। ওই সময়ের মধ্যে কখনওই ইন্ডোরে কোনও চিকিৎসকের যাওয়ার কথা নয়।’’
হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ কম বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্মীদেরই একটি অংশ। জেলা সদর হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘চারজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। সব কিছুই নির্ভর করে সদিচ্ছার উপর। মাত্র দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন চোখের বিভাগে, সেটা তো চলছে। সমস্যা হচ্ছে না তো।’’ তবে শিশু বিভাগের আউটডোরে ভোগান্তির জন্য কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে কিনা তা নিয়ে অবশ্য সুপার কিছুই বলেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy