উত্তপ্ত: রায়গঞ্জে সুভাষগঞ্জে সুব্রত ঘোষের হত্যাকারীকে গ্ৰেফতারের দাবিতে পথ অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
পুলিশ আশ্বাস দিয়েছিল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু দু’মাস পার হলেও এফআইআর-এ যে তিন জনের নাম ছিল, তাদের মধ্যে মাত্র এক জনকে ধরতে পেরেছে পুলিশ। বাকি দু’জন তো বটেই, সিসিটিভি দেখে আরও যে চার জনকে শনাক্ত করা হয়েছিল, তাদেরও পুলিশ বাকিদেরও ধরতে পারেনি। তাই রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা তৃণমূল নেতা সুব্রত ঘোষের (৫০) খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে ফের আন্দোলনে নামলেন বাসিন্দাদের একাংশ।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সুভাষগঞ্জ এলাকায় তাঁরা স্থানীয় ভিএনসিমোড় ও রেলগুমটি সংলগ্ন রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই দু’টি রাস্তায় বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে পথ অবরোধ করেন। রাস্তার উপরে জ্বালানো হয় একাধিক টায়ারও। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাস্থলে বিরাট পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। অবরোধ চলে ৫ ঘণ্টা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সুব্রতর খুনের ঘটনার পর দু’মাস গড়িয়েছে। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় এখনও পর্যন্ত খুনের ঘটনায় জড়িত সাত দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়নি। অথচ তারা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ নিহতদের পরিবার এবং বাসিন্দাদের। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, ‘‘পুলিশ নিষ্ক্রিয় নেই। সুব্রতবাবুকে খুনের ঘটনায় এফআইআরে নাম থাকা দুই ব্যক্তি-সহ তদন্তে জানা গিয়েছে এমন আরও কয়েকজন অভিযুক্ত পালিয়ে গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। সব অভিযুক্তকেই দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’’
পেশায় ঠিকাদার সুব্রতবাবু রায়গঞ্জ ব্লকের মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি রায়গঞ্জ শহর থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় সুভাষগঞ্জের ভিএনসি মোড় সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার ধারে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। ভারি কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পরে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) আনা হয়। হামলার পরদিন পরিবারের তরফে এলাকার তিন যুবকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়। থানায় বিক্ষোভ দেখান হয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর ইটাহার থানার বৈদড়া এলাকা থেকে সুভাষগঞ্জের বাসিন্দা অলোক বিশ্বাস নামে এক তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৪ সেপ্টেম্বর সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুব্রতর মৃত্যু হয়। অলোক সহ সমস্ত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। খুনের প্রতিবাদে সুভাষগঞ্জে সাধারণ মানুষ বন্ধ পালনে নামলে পুলিশ অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেয়।
পুলিশের দাবি, ঠিকাদারি কাজের টাকা লেনদেন নিয়ে গোলমালের জেরে দুষ্কৃতীরা ওই দিন সুব্রতর উপরে হামলা চালায়। আন্দোলনকারী বাসিন্দাদের তরফে দীপঙ্কর ভৌমিকের দাবি, ‘‘পুলিশ চূড়ান্ত নিষ্ক্রিয়। অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। প্রয়োজনে আবার বিক্ষোভ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy