Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভিড়ের মাঝে কি টিকিট ছাড়াই

শয়ে-শয়ে যাত্রীর মুখে স্লোগান ‘ব্রিগেড চলো’। প্রবল ভিড় রেল স্টেশনে তারই মধ্যে রয়েছেন নিত্যযাত্রীরাও। রেলের আধিকারিকদের অনেকেরপ সন্দেহ, এই ভিড়ের ফাঁক গলে অনেকেই  বিনা টিকিটেই উঠে পড়ছেন ট্রেনে। কিন্তু যাঁদের টিকিট দেখার কথা তাঁরা কী করছেন ? 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:২২
Share: Save:

শয়ে-শয়ে যাত্রীর মুখে স্লোগান ‘ব্রিগেড চলো’। প্রবল ভিড় রেল স্টেশনে তারই মধ্যে রয়েছেন নিত্যযাত্রীরাও। রেলের আধিকারিকদের অনেকের সন্দেহ, এই ভিড়ের ফাঁক গলে অনেকেই বিনা টিকিটেই উঠে পড়ছেন ট্রেনে। কিন্তু যাঁদের টিকিট দেখার কথা তাঁরা কী করছেন ?

টিকিট চেকারদের একাংশ একান্তে জানাচ্ছেন, সেই প্রবল ভিড়ে জনে জনে টিকিট দেখার মতো ব্যবস্থা বা পরিকাঠামো কোনওটাই নেই।

শুক্রবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে সকাল থেকে রাত ৯টা অবধি চোখে পড়েছে ভিড়ের তেমনই ছবি।

শুক্রবার সকালে এনজেপিতে হলদিবাড়ি-কলকাতা প্যাসেঞ্জার ট্রেনের চার যাত্রীর কথা ধরা যাক। ইস্টার্ন বাইপাস এলাকার বাসিন্দা বাবুয়া বর্মণ, নবীন রায়, পরম সিংহ, হিরণ সাহা। ওই যুবকেরা কেউ গ্যারাজে কাজ করেন। কেউ অটো চালান। কারও লটারির স্টল রয়েছে। কেউ-ই রাজনীতি করেন না। কোনও দলের মিটিং-মিছিলেও যান না। কিন্তু, বিনা খরচে কলকাতায় গিয়ে শনি-রবিবার দু’দিন কাটানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না তাঁরা। নবীন বললেন, ‘‘শনিবারটা ছুটি নিয়েছি। চারজনে মিলে আগেই খোঁজখবর নিয়েছিলাম। জেনেছিলাম বড় মাপের নেতারা দিনের ট্রেনেই যাবেন। তাতেই ভিড় বেশি হবে। তাই ভিড়ে মিশে গিয়েছি। স্লোগান দিচ্ছি। ওটাই টিকিট!’’ নিত্যযাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জার থেকে দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেস, একই ছবি। মিছিল করে এনজেপি স্টেশনে ঢুকে তাঁরা যে যাঁর মতো কামরায় উঠে দখল করে নিয়েছেন আসন। তাতে সংরক্ষিত টিকিট কেটে রাখা যাত্রীদের অনেকের আসনে টান পড়েছে। কিন্তু, কলকাতামুখী ভিড়ের মেজাজ বুঝে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। কেউ নিঃশব্দে ট্রেন থেকে নেমে ফিরে গিয়েছেন। আবার কেউ চেপেচুপে বসে ব্রিগেড-যাত্রীদের জায়গাও করে দিয়েছেন।

ওই ট্রেনেই শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার ও দার্জিলিং জেলা যুব সভাপতি বিকাশ সরকার গিয়েছেন। রঞ্জন বলেন, ‘‘আমরা অনেকেই টিকিট কেটেছি। তবে টিকিট না কেটে কয়েকজন উঠেছেন শুনেছি। হয়তো দেরিতে পৌঁছনোয় কাটতে পারেননি।’’ তাঁর দাবি, রাস্তায় অনেকে টিটির কাছ থেকে টিকিট কেটেছেন।

কী বলছে রেল? উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের জনসংযোগ বিভাগের এক শীর্ষ অফিসার জানান, গোটা দেশেই বড় মাপের মিটিং-মিছিলের সময়ে টিকিট না কেটে ট্রেনে ওটার রেওয়াজ রয়েছে বলে সে সময়ে বিশেষ চেকিং হয় না। তিনি জানান, অতীতে মিছিলের সময়ে টিকিট পরীক্ষা করাতে গিয়ে একটি রাজ্যে বড় মাপের গোলমাল হয়েছিল। তাই রেল কড়া পদক্ষেপ করে না বলে ওই অফিসার জানান। তবে সংরক্ষিত আসনের যাত্রীদের হয়রানির প্রবণতা সামান্য হলেও কমেছে বলে দাবি রেলের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE