Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রশাসনের নামে চিঠি বোর্ডের

জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে গেল জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের তৃণমূল বোর্ড। চতুর্দশ অর্থ কমিশনারে বরাদ্দ টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে দেওয়া হচ্ছে না বলে জেলা পরিষদের অভিযোগ।

সেই চিঠি।

সেই চিঠি।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৩৬
Share: Save:

জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে গেল জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের তৃণমূল বোর্ড। চতুর্দশ অর্থ কমিশনারে বরাদ্দ টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে দেওয়া হচ্ছে না বলে জেলা পরিষদের অভিযোগ। সে নালিশ জানিয়ে জেলার ট্রেজারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠাল তৃণমূল বোর্ড। সেই চিঠিতে টানা হয়েছে জেলাশাসকের প্রসঙ্গও। বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়ে জেলাশাসককে জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি বলে লেখা হয়েছে চিঠিতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ চিঠি জেলা পরিষদ থেকে নবান্নে পাঠানোর পরেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে জেলা প্রশাসনের অন্দরে। শাসকদলের পরিচালনায় থাকা কোনও জেলা পরিষদের সরাসরি প্রশাসনের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা এবং মুখ্যমন্ত্রীকে সরকারি ভাবে নালিশ জানানো নজিরবিহীন বলে দাবি করেছেন আমলাদের একাংশও।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মণের প্যাডে লেখা চিঠি নবান্নে পাঠানো হয়েছে। তবে উত্তরাদেবী বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। ঘটনার সূত্রপাত, চলতি মাসের গোড়ায়। চর্তুদশ অর্থ কমিশন জলপাইগুড়ি জেলার আশিটি পঞ্চায়েতের জন্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। জেলা পরিষদের দাবি, সেই টাকা ট্রেজারিতে আটকে রাখা হয়েছে। শীঘ্রই লোকসভা ভোট ঘোষণা হবে, তখন আর এই টাকায় টেন্ডার করা যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে নালিশ করেছে জেলা পরিষদের তৃণমূল বোর্ড।

চিঠিতে ট্রেজারি আধিকারিক শুভঙ্কর দাসের নাম লিখে তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে জেলা পরিষদ। শুভঙ্করবাবু প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি। তবে সূত্রের খবর, শুভঙ্করবাবু প্রশাসনকে জানিয়েছেন, তিনি যা করেছেন দফতরের আইন মেনেই করেছেন। তিনি জানান, কোন পদ্ধতিতে গ্রাম পঞ্চায়েতের অ্যাকাউন্টে টাকা বরাদ্দ হবে, সে পদ্ধতিও জেলা পরিষদকে বলে দিয়েছেন। প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়াও।

জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সদ্য গঠিত জেলা পরিষদের চাপানউতোর নতুন নয়। মাসখানেক আগেই জেলা পরিষদের বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় সাত আমলাকে শো-কজ করে বোর্ড। একশো দিনের প্রকল্পে প্রশাসনের কাজের পদ্ধতি নিয়েও জেলা পরিষদের তরফে আপত্তি তোলা হয়। এ বার লোকসভা ভোটের আগে সরাসরি সংঘাতে গেল বোর্ড।

শাসকদলের ভিতরকার খবর, পঞ্চায়েত ভোটের পর নতুন গঠিত গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদ সবে কাজ শুরু করেছে। লোকসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক লাভ হবে এমন নানা জনমোহিনী কাজ করতে চাইলেও প্রশাসনিক নিয়মে সেই কাজগুলিতে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। তাতেই বিড়ম্বনায় পড়েছেন জেলার নেতারা। ভোটের মুখে দ্রুত যাতে সেই জটিলতা কেটে যায়, তার বন্দোবস্ত করতেই প্রশাসনের উপর জেলা পরিষদ চাপ তৈরি করে রাখল বলে মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE