Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পরিচয়পত্র ব্যাগে, প্রশ্নে জবাব রক্ষীর

তার পরেও রাতের হাসপাতাল কেন কার্যত ‘অরক্ষিত’?

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ১২:১৫
Share: Save:

খাতায়-কলমে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অরক্ষিত নয়। কিন্তু, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব অনিল বর্মা হাসপাতালে এসে নিরাপত্তা রক্ষীদের বড় অংশের দেখা পেলেন না। প্রকাশ্যেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে হাসপাতালের কর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “এটাকে হাল্কা ভাবে নেবেন না। বিষয়টা খুবই গুরুতর।”

মঙ্গলবার রাতে ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে ওই কথাগুলি বলে গাড়িতে উঠে পড়েন স্বাস্থ্যসচিব। যাওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “হাসপাতালের পরিকাঠামো দেখতে এসেছিলাম। অনেক কিছুই দেখে গেলাম।” তিনি মুখে না বললেও হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা নিয়ে যে গলদ ধরা পড়েছে, তা স্পষ্ট। মঙ্গলবার রাত সওয়া ৯টা নাগাদ স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা-সহ দফতরের ৭ জন আধিকারিক বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানকার বিভিন্ন বিভাগে যাওয়ার সময় অপরিচ্ছন্নতার ছবি স্বাস্থ্যকর্তাদের চোখে পড়ে। ব্লাড ব্যাঙ্কের পরিকাঠামো দেখার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে স্বাস্থ্যসচিব জানতে চান, এই মুহূর্তে হাসপাতাল সামলানোর জন্য কত জন নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছে। জবাব আসে ১৮ জন।

এর পরেই তিনি সব নিরাপত্তারক্ষীকে তাঁর সামনে হাজির করতে বলেন। এতেই হাসপাতাল কর্তাদের মধ্যে মুখ চাওয়াচাওয়ি শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ পরে তিন জন নিরাপত্তারক্ষী হাজির হন। কিছু পরে আরও এক জন। তাঁকে দেখে স্বাস্থ্যসচিবের প্রশ্ন, “এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? পোশাক পরছিলেন? পরিচয়পত্র সঙ্গে রয়েছে?” ওই নিরাপত্তারক্ষী বলেন, “স্যর, পরিচয়পত্র ব্যাগে রয়েছে।” এ কথা শুনে হাসপাতালের এক কর্তা মুচকি হাসতেই ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেলেন স্বাস্থ্যসচিব। কর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “এত বড় হাসপাতালে কোনও ঘটনা ঘটলে এই চার জন রক্ষী কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে? বিষয়টি দেখবেন।”

বর্ধমান মেডিক্যালে নিরাপত্তা-সমস্যা বরাবরের। ‘অরক্ষিত’ অবস্থায় থাকার সুযোগে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে ডাক্তারদের উপরে হামলাও হয়েছে। যা নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারেরা গত বছর ডিসেম্বরে টানা ২৮ ঘণ্টা হাসপাতাল সুপারকে ঘিরে রেখেছিলেন। আবার সংখ্যায় কম হওয়ার জন্য হাসপাতালের গোলমাল আটকাতে গিয়ে নিরাপত্তা রক্ষীরা মার খেয়েছেন, এমন নজিরও রয়েছে।। মাস খানেক আগেও ৩৬ জন নিরাপত্তা রক্ষী বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সামলাতেন। সেখানে এখন ৮ জন সুপারভাইজার-সহ ২৯২ জন রক্ষী রয়েছেন।

তার পরেও রাতের হাসপাতাল কেন কার্যত ‘অরক্ষিত’?

হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুটি সংস্থাকেই শো-কজ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট পোশাক ও পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে দায়িত্ব সামলানোর নির্দেশ দিয়েছি।” ওই দুটি সংস্থার দাবি, ১৮ জন নিরাপত্তা রক্ষীই হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় ছিলেন। কেউ কেউ পোশাক পরে ছিলেন না বলে সময়ে হাজির হতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Bardhaman medical college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE