মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে গোটা হাসপাতাল জুড়ে। প্রতীকী ছবি।
সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে ১২টি মৃতদেহের, কিন্তু বর্তমানে রয়েছে ৫০টি। শুধু তাই নয়, বেহাল মরচুয়ারি কুলার মেশিনও। ভরসা তাই মূলত ফর্মালিন ও মেঝেয় রাখা ফ্যান। এমনই অবস্থা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গের। আর তার জেরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে গোটা হাসপাতাল জুড়ে। তবে হাসপাতাল সূত্রে অবশ্য জানা গেল, শীঘ্রই এখানে ৫০টি মৃতদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কাজ চলছে মরচুয়ারি কুলার মেশিন বসানোরও।
মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত হওয়ার আগে মালদহ জেলা হাসপাতাল মর্গে মাত্র ৬টি মৃতদেহ সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা ছিল। মেডিক্যাল কলেজ হওয়ার পরে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ১২টি করা হয়েছে। পুরনো জায়গা থেকে মর্গ সরিয়ে আনা হয় মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের এক দিকে। হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মর্গে প্রতিদিনই গড়ে ৫ থেকে ৭টি করে মৃতদেহ আনা হয় ময়নাতদন্তের জন্য। যে সমস্ত মৃতদেহের পরিচয় মেলে, সেগুলি ময়নাতদন্তের পরে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রেল বা অন্য দুর্ঘটনায় মৃত্যু, বিভিন্ন অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় মৃতদেহও আসে। অনেক সময়েই তার দাবিদার কেউ থাকে না। এ ধরনের বেওয়ারিশ মৃতদেহের পাহাড় জমছে মালদহের মর্গে।
বর্মানে ১২টি মৃতদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে রয়েছে ৫০টিরও বেশি। ফলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে গোটা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল জুড়েই। হাসপাতালে আসা রোগী এবং তাঁদের পরিজনেরাও জানালেন, মর্গের পাশ দিয়ে দুর্গন্ধে হাসপাতালে ঢোকা যাচ্ছে না। এ জন্য সিঙ্গাতলার দিক দিয়ে হাসপাতালে না ঢুকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দিকের গেট দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে। মর্গের পাশেই প্রশাসনিক ভবন। সারা দিনে সেখানে বিভিন্ন কাজে আসেন অনেকেই। তাঁদেরই কয়েকজনের কাছে জানা গেল, গন্ধে ওই চত্বরে যাওয়া রীতিমতো মুশকিলের হয়ে দাঁড়িয়েছে। বার্থ সার্টিফিকেট বিষয়ে খোঁজ করতে শিশুকে সঙ্গে নিয়েই ওই প্রশাসনিক ভবনে এসেছিলেন রতুয়ার নুরজাহান বিবি। মর্গের পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে বললেন, ‘‘এত দুর্গন্ধে যে, কোনও রকমে নাকে রুমাল দিয়ে যেতে হল। এখানে এসে তো অসুস্থ হয়ে পড়ার জোগাড়।’’
তবে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেল, ৫০টি মৃতদেহ সংরক্ষণ করা যায় এমন মরচুয়ারি কুলার বসছে হাসপাতালে। পুরো প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ৮০ লক্ষ টাকা। তা দিয়েই প্রাথমিক ভাবে ৩০টি মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য কুলার বসেছে। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রতীপকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘মর্গে এখন মৃতদেহ সংরক্ষণ ব্যবস্থা ঠিক নেই। ৫০টির বেশি মৃতদেহ রয়েছে। ফলে সমস্যা হচ্ছে। বেওয়ারিশ এই দেহগুলি সত্কারের জন্য প্রশাসনিক স্তরে জানানো হয়েছে।’’ তিনি জানান, মর্গে এখন ৩০টি দেহ সংরক্ষণের জন্য মরচুয়ারি কুলার মেশিন বসেছে। তার মধ্যে ১৪টি মেশিন অ্যানাটমি বিভাগের জন্য রাখা হবে। বাকিগুলি থাকবে ফরেন্সিক বিভাগে। শীঘ্রই সেগুলি চালু হবে। আরও ২০টি মেশিনও এখানে বসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy