শিল্পতালুক: আমবাড়ি-ফালাকাটা। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে লগ্নি করতে এসেছিলেন উত্তরপ্রদেশের অশোক আগরওয়াল। আমবাড়ি-ফালাকাটায় ৩ একর জমিও কিনেছিলেন। সেই জমিতে মাপজোক করতে এসেই বিপত্তি। অভিযোগ, স্থানীয়দের মধ্যে কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁর লোকজনকে নানা ভাবে হুমকি দেওয়া শুরু করেন। এখন অশোক নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। জানালেন, জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করার পরে কারখানা করা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
গত ২০১৪ সালে আমবাড়ি ফালাকাটার শিল্পতালুকের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকে এত দিনের মধ্যে অশোকই প্রথম ব্যবসায়ী, যিনি কারখানার কাজে হাত দিতে এলেন। জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ২০ কোটি টাকা লগ্নি করবেন তিনি। এখন সেই অশোকই বলছেন, ‘‘কাজ শুরু না করতেই যা অবস্থা দেখছি, কাজ শুরু হলে না জানি কী হবে! নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। আগামী সোম বা মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে। তার পরে ঠিক করব, এখানে কারখানা করব কিনা।’’
কলকাতার বেঙ্গল সামিটে যোগ দিয়েছিলেন অশোক। তখনই তাঁকে অনুরোধ করা হয়। অশোকের কথায়, ‘‘আমি অসমে কারখানা করতাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ডাকলেন, এখানে এলাম।’’ অশোকের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল এবং বিজেপি নেতাদের একাংশ একসঙ্গে গিয়ে তাঁদের কাছ থেকে কারখানা তৈরির সরঞ্জাম ও শ্রমিক নিতে হবে বলে হুমকি দিয়েছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে পানিকৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান অলপ রায়, মগরাডাঙি গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপির দীপক মণ্ডল, তৃণমূলের পানিকৌরি অঞ্চল সভাপতি আব্বাস আলির নাম আছে। পানিকৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতে রয়েছে এই শিল্পতালুক। অভিযুক্তদের দাবি, তাঁরা এলাকা থেকে শ্রমিক নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। হুমকি দেওয়া বা কমিশন চাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।
আরও পড়ুন: চান না সর্বানন্দ, ধীরে চলো নাগরিকত্ব বিলে
আব্বাস আলি বলেন, ‘‘আমরা ওঁকে বালি, পাথর নেওয়ার জন্য হুমকি দিইনি। বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। উনি যে ভাবে কাজ করতে চান, করুন।’’ অলপ রায় বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ দীপক মণ্ডল বলেন, ‘‘আগেও গ্রাম থেকে শ্রমিক নেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম।’’
আরও পড়ুন: ভোটের পরে রাজস্থানে রাস্তায় পড়ে থাকল ইভিএম!
সম্প্রতি একাধিক বার উত্তরবঙ্গ সফরে এসে সিন্ডিকেট ও জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেও ফাঁসিদেওয়া ফুড পার্ক থেকে আমবাড়ি-ফালাকাটার শিল্পতালুক, সর্বত্রই তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার অশোক অভিযোগ করেন। জেলাশাসক জলপাইগুড়িতে নেই। তাই তাঁর সঙ্গে অশোকের বৈঠক কবে হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা এখনও অনিশ্চিত। তবে অতিরিক্ত জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত করে দেখছি। শিল্পপতিকে সমস্ত রকম সাহায্য করা হবে। যারা সমস্যা তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশ এখনও তৃণমূলের কাউকে গ্রেফতার করেনি। তবে ওই শিল্পতালুকে স্থায়ী ক্যাম্প অফিস করা হবে বলে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে জেলা পুলিশ। আজ, রবিবার শিল্পতালুকে যাওয়ার কথা নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের। সংগঠনের সম্পাদক সুরজিৎ পাল বলেন, ‘‘ওই বিনিয়োগকারী যাতে ফিরে না যান, সে জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সমস্ত সাহায্য করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy