Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দু’বছর গান বন্ধ ছিল: ক্যামেলিয়া

ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন নেই। ক্যামেলিয়া চায় গবেষণা করতে।

সস্নেহে: ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে ক্যামেলিয়া। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

সস্নেহে: ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে ক্যামেলিয়া। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

সৌমিত্র কুণ্ডু 
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০৬:১৩
Share: Save:

কলকাতার বোর্ড অফিসে মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা শুরু হয়েছে। ওদিকে, রায়গঞ্জে কলেজপাড়ার বাড়ির দোতলায় গৃহদেবতার সামনে বসে ক্যামেলিয়া রায় ওরফে তৈথি। বাবা কাঞ্চীরাম রায় নীচের ঘরে, মা মাধুরী দোতলার ঘরে। দু’জনেরই উদ্বিগ্ন চোখ টিভিতে ফলাফলের খবরের দিকে।

এক সময় মেধাতালিকায় তৃতীয় স্থানে নিজের নাম শুনতে পেয়ে ঠাকুরঘর থেকে ছুটে আসে ক্যামেলিয়া। ওদিকে বাবা মেয়ে-স্ত্রীকে খবরটা দিতে দোতলায় উঠে এসেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আনন্দের জোয়ার সারা বাড়ি জুড়ে। খবর পেয়ে গিয়েছেন পড়শিরা। ততক্ষণে রায়গঞ্জ গার্লস হাইস্কুলেও রীতিমতো হইহই পড়ে গিয়েছে ক্যামেলিয়ার সাফল্যে। ইতিমধ্যে পিসি-দিদিমারা চলে আসেন। বাড়িতে চলে এসেছেন পড়শিরা। রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস, এলাকার কাউন্সিলর অসীম অধিকারী, কেয়া চৌধুরীরা সকলেই হাজির। সফল ছাত্রীকে মিষ্টিমুখ করানো, সংবর্ধনার পালা শুরু হয়ে যায়। স্কুল থেকে শিক্ষিকারা ফোন করেন।

ক্যামেলিয়া পেয়েছে ৬৮৯ নম্বর। বাংলায় ৯৫, ইংরেজিতে ৯৭, অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞান ও জীবন বিজ্ঞানে ১০০ করে, ইতিহাসে ৯৮ এবং ভূগোলে ৯৯। পঞ্চম শ্রেণিতে সে দ্বিতীয় হয়েছিল এক নম্বরের জন্য। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বরাবর সে প্রথম। ক্যামেলিয়ার কথায়, ‘‘মাধ্যমিকের আগে টেস্ট থেকে নম্বর আরও বাড়বে আশা করেছিলাম। আশা ছিল মেধাতালিকায় থাকব।’’ বাবা কাঞ্চিরাম উদ্ভিদবিদ্যায় একসময় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে প্রথম হয়েছিলেন। রায়গঞ্জ বিজ্ঞান কেন্দ্রের তিনি সম্পাদকও। তিনিই মেয়েকে জীবন বিজ্ঞান পড়াতেন। অন্য বিষয়ের গৃহশিক্ষক ছিল ক্যামেলিয়ার। মা মাধুরী পূর্ব গোয়ালপাড়া এফপি স্কুলের শিক্ষিকা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পড়াশোনার বাইরে গান করা এবং গল্পের বই পড়ার অভ্যাস রয়েছে। মাধ্যমিকের জন্য নবম শ্রেণি থেকে গান শেখা বন্ধ রেখেছিল ক্যামেলিয়া। ভাই শ্রেয়ম সারদা বিদ্যামন্দিরের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। দিদির সাফল্যে খুশি শ্রেয়মও। বাড়িতে মায়ের হাতের রান্না খেতে ভালবাসে ক্যামেলিয়া। পছন্দের খাবার নান রুটি, সঙ্গে চিলি পনির। মাছ বা মাংস খেতে অতটা পছন্দ করে না সে।

ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন নেই। ক্যামেলিয়া চায় গবেষণা করতে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের কিশোর বিজ্ঞানী প্রোৎসাহ যোজনা বৃত্তি পরীক্ষায় বসতে চায়। সঙ্গে আইআইটি’র জন্যেও প্রস্তুতি নেবে। আপাতত রায়গঞ্জেই একাদশ শ্রেণিতে্ পড়বে। নিজের স্কুলে অথবা রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলে ভর্তি হতে চায় ক্যামেলিয়া। মা মাধুরী বলেন, ‘‘ঈশ্বরে অগাধ বিশ্বাস মেয়ের। ও ভাল ফল করেছে বলে খুব ভাল লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE