জলমগ্ন: কোচবিহারের কারিশাল এলাকা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
মৌসুমি অক্ষরেখা নতুন করে শক্তি বাড়িয়েছে। তার জেরে আরও অন্তত পাঁচদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে দিল উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সঙ্গে জল বাড়বে নদীগুলিতেও। সে জন্য কৃষক এবং মৎস্যজীবিদের সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছে গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে। পাহাড়ের বৃষ্টিতে জল বাড়তে শুরু করেছে তোর্সা-তিস্তায়। অসংক্ষিত এলাকায় বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জলের তলায় চলে গিয়েছে বিঘের পর বিঘে জমির ফসল। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবাকেন্দ্রের প্রিন্সিপাল নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই সময় খুব সাবধান এবং সচেতন থাকতে হবে। ফসল যেমন রক্ষা করতে হবে, তেমনই সুরক্ষিত রাখতে হবে নিজেদেরকেও।”
সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মানসাই নদীতে লালা সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। রায়ডাক, তোর্সা নদীতে হলুদ সঙ্কেত জারি রয়েছে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবাকেন্দ্র সূত্রের খবর, হিমালয়ের পাদদেশে তৈরি হওয়া মৌসুমি অক্ষরেখার জন্য ১২ জুলাই পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ছিল। এই সময়ে এসে ওই অক্ষরেখা আরও শক্তিশালী হয়েছে। তাতে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হবে। উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হবে।
কত বৃষ্টি
জায়গা বৃষ্টির পরিমাণ*
জলপাইগুড়ি ১৪৫.৪০
আলিপুরদুয়ার ৩৪৫.৪০
কোচবিহার ২০৭.০০
শিলিগুড়ি ২৩২.০০
মালবাজার ২৯০.৬০
হাসিমারা ১৬১.৪০
বানারহাট ২১০.০০
মাথাভাঙা ১০১.৪০
তুফানগঞ্জ ১১৫.২০
মেখলিগঞ্জ ১১০.০০
* গত ২৪ ঘণ্টায়, মিলিমিটারে
মৌসম সেবাকেন্দ্রের তরফে এই সময়ে মৎস্যজীবীদের নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কৃষকদের ক্ষেতে কাজ করার সময় সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বজ্রবিদ্যুতের হাত থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, অতি বৃষ্টিপাতের জন্য পাহাড়ে ধস নামতে পারে। সে জন্য পাহাড়ের বাসিন্দাদেরও চলাফেরার ক্ষেত্রে সাবধানতার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সেবাকেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, এই সময়ে আনাজের গোড়াপচা রোগ হয়। তাতে প্রচুর আনাজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমন ধানের বীজতলা ডুবে যেতে পারে। দুইক্ষেত্রেই নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ট্রে পদ্ধতিতে আমন ধানের বীজতলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে। গবাদি পশুদের এই সময় ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ রোগ হয়। তাদের খাবার খড় ভিজে যায়। তাই তাঁদের উঁচু জায়গায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতি হতে পারে মাছ চাষেও। পুকুর ভেসে গেলে মাছ বেরিয়ে যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy