Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

বাস টার্মিনাসেই কাটছে দিন শতাধিক শ্রমিকের

শুধু সফিরুল নন। তাঁর মত শতাধিক শ্রমিক গত বৃহস্পতিবার থেকে তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে রয়েছেন।

অপেক্ষায়: শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে  ঘুমিয়ে পরেছেন এক শ্রমিক। ছবি: স্বরূপ সরকার

অপেক্ষায়: শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে  ঘুমিয়ে পরেছেন এক শ্রমিক। ছবি: স্বরূপ সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২০ ০৫:৪৬
Share: Save:

দুর্বল শরীরে কোনও রকম শ্রমিকদের লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বাড়ি ফেরার গাড়ি টার্মিনাসে ঢুকলেই শুরু হবে শরীর পরীক্ষা। তার আগে মশার কামড়ে রাত কাটছে বাস টার্মিনাসে। কবে বাড়ি ফেরান হবে তারও নিশ্চিয়তা নেই। ফলে লাইন ছেড়ে অন্যত্র যেতেও চাইছেন না সফিকুল ইসলাম। মনিপুরে নির্মাণ কাজে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে একজনে তিন হাজার টাকা করে গাড়ি ভাড়া দিয়ে কোনও রকম শিলিগুড়িতে এসেছেন। যাবেন মুর্শিদাবাদে। তিনি জানান, টার্মিনাসে অনেক জায়গার শ্রমিকদের একসঙ্গে থাকতে হচ্ছে। সেখানে মশার উপদ্রব। কবে ঘরে ফেরান হবে তা জানান হচ্ছে না। প্রায় পাঁচদিন আগে ঘরের উদ্দেশ্যে বার হন। শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘‘কবে বাড়ি ফিরব জানি না। কয়েকদিন থেকে স্নান, ভাল খাওয়া নেই। শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত বাড়ি ফেরা প্রয়োজন।’’

শিলিগুড়ি মহকুমা শাসক সুমন্ত সহায় জানান, যাঁরা আগে এসেছেন তাঁদের তো আগে ফেরাতে হবে। আর কয়েকদিন আগেই মুর্সিদাবাদ, বর্ধমানের শ্রমিকদের ঘরে পাঠান হল। প্রত্যেকদিন প্রচুর শ্রমিক আসছেন। ৮-১০ জন শ্রমিকের জন্য তো আর বাস পাঠান যায় না। তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত শ্রমিকদের ঘরে ফেরান হচ্ছে। ২-১ দিন রাখা হলেও খাবার দিয়ে ভাল জায়গায় রাখা হচ্ছে। আমরা শরীর পরীক্ষা করিয়ে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কারও শরীর খারাপ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

শুধু সফিরুল নন। তাঁর মত শতাধিক শ্রমিক গত বৃহস্পতিবার থেকে তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে রয়েছেন। সেখান থেকে তাঁদের সরকারি বাসে ফেরানোর কথা। তাঁরা উত্তরপূর্বের নাগাল্যান্ড, মনি পুর, অসম থেকে ঘরে ফিরছেন। কেউ মালদহ মুর্শিদাবাদ, নয়ত বর্ধমানে যাবেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, তাঁদের অস্বাস্থ্যকর ভাবে রাখা হচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন রাতভর। সেখানের তাঁদের মধ্যে দূরত্ব বজায় থাকছে না। ফলে যে কোনও সময় করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। তার উপর আবার সেখানে মশার উপদ্রব। তাতে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে।

মালদহে যাবেন ফজলে হক। অসম থেকে ৩৫ কিলোমিটার ভিতরে নির্মাণ কাজে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের ফেরাতে কোনও গাড়ির ব্যবস্থা ছিল না। টাকা শেষ হওয়ায় শিলিগুড়ি থেকে হাঁটা পথে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রশাসন তাঁদের গাড়িতে ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউন থেকে কাজ বন্ধ। যা আয় করেছি তা খেতে শেষ। বাড়িতে পরিবার খুবই সংকটে রয়েছে। বাড়ি ফিরত পারলে পরিবারের পাশে তো দাঁড়াতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE