শোক: তিন জনের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে দু’টি পরিবার। নিজস্ব চিত্র
দু’দিন আগেই এনজেপি থানা এলাকার উত্তরকন্যার কাছে জাতীয় সড়কে বাইকে ঘুরতে বেরিয়ে মারা গিয়েছিলেন বাবা এবং ছোট্ট মেয়ে। রবিবার একই রকম দুর্ঘটনা। এ বার পাহাড়ের কোলে সেবকে। বাইকে করে সেবকে বেড়াতে গিয়ে এক পরিবারের দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মারা গেলেন মারা গেলেন এক মহিলা।
রবিবার সেবক ফাঁড়ির কাছে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ ওউলাদারা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় চোট পেয়েছেন পরিবারের কর্তা তাপস দাস। তবে তাঁকে শহরের একটি নার্সিংহোম থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। মৃতদের নাম সঙ্ঘমিত্রা দাস (২৭), প্রিয়স্মিতা দাস (৭) এবং দেবস্মিতা দাস (১ বছর ৮ মাস)। তিন জনই ঘটনাস্থলে মারা গিয়েছেন। সকলেই শিলিগুড়ি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেবাশিস কলোনির বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, দক্ষিণ ভারতনগরের বাসিন্দা পেশায় একটি অর্থলগ্নি সংস্থার কর্মী তাপস একটি বাইকে করে স্ত্রী এবং দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে এ দিন দুপুরে সেবক বেড়াতে গিয়েছিলেন। সঙ্গে আর একটি বাইকে ছিলেন তাপসের দাদা পঙ্কজ দাস, তাঁর স্ত্রী পূজা। আর একটি বাইকে এবং তাপসবাবুর বোন শিখা, তাঁর স্বামী এবং তাঁদের এক মেয়েকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। সেবক থেকে ফেরার পথে ওউলাদারার কাছে একটি বাঁকের মুখে একটি ট্রাক পিছন থেকে এসে সজোরে ধাক্কা মারে তাপসবাবুর বাইকে। তার জেরে ছিটকে যান তাপসবাবুর স্ত্রী এবং দুই কন্যা। কোনওরকমে বেঁচে যান তাপসবাবু। পুলিশ জানায় ট্রাকটি ঘটনার পর পালিয়ে গিয়েছে। আহত অবস্থায় তাপসবাবুকে সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে আসেন এলাকার লোকজন এবং আত্মীয়েরা। চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি তিন জনের দেহ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানায় দুর্ঘটনার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে তাপসবাবুর ছোট মেয়ের দেহ অনেকক্ষণ খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না।
এই পরিবারের কাদের মাথায় হেলমেটে ছিল, কাদের ছিল না, তা এখনও পুলিশের কাছে পরিষ্কার নয়।
মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় দেবাশিস কলোনিতে পুরোপুরি শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ দিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, তাপসবাবু মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে হারিয়ে। পুরো পাড়া হাজির হয়েছিল সমবেদনা জানাতে। কথা সরছে না পরিবারের কারও মুখে। সঙ্ঘমিত্রার বাপের বাড়িও ওই এলাকায়। তাঁর বান্ধবী মৌমিতা অধিকারী বলেন, ‘‘বড় মেয়েটি সবে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠেছিল পাঠভবন স্কুলে। আমি তো ভাবতেই পারছি না হঠাৎ এরকম হয়ে যাবে।’’ ঘটনার খবর পেয়ে আসেন এলাকার কাউন্সিলর শঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি এতটাই দুঃখজনক আমি শোনার পর থেকে ওদের সমবেদনা জানানোর ভাষা খুঁজে পাইনি।’’ পরিবারটির পাশের থাকার আশ্বাস দিয়েছেন শঙ্করবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy