ভাইয়ের কপালে: ভাইদের ফোঁটা দিচ্ছেন শোভা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
জন্ম থেকেই তাঁর দু’টি হাত অসম্পূর্ণ ও আংশিক অসাড়। তাই স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেন না তিনি। হাত দিয়ে ফোঁটা দিতেও খানিক অসুবিধাই হয়। তাই শুক্রবার বাঁ পায়ের আঙুল দিয়েই দুই ভাইকে ফোঁটা দিলেন রায়গঞ্জের রাঙাপুকুর এলাকার বাসিন্দা তরুণী শোভা মজুমদার।
শোভা অবশ্য জানালেন, শুধু এ দিনের ভাইফোঁটাই নয়, প্রতিদিন বাড়িতে রান্না করা থেকে বাসন মাজা-সহ বিভিন্ন কাজ তিনি করেন তাঁর দুই পা দিয়েই। ২০১১ সালে স্থানীয় রাঙাপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকার চাকরি পান তিনি। স্কুলেও মাঝেমধ্যে তিনি পা দিয়ে ব্ল্যাকবোর্ডে পাঠ্যক্রমের বিভিন্ন বিষয় লিখে পড়ুয়াদের বুঝিয়ে দেন।
এ দিন সকালে শোভা বাড়ির বারান্দায় তাঁর দুই ভাই পার্থ ও বিকাশকে বসিয়ে তাঁদের কপালে নিজের বাঁ পায়ের আঙুল দিয়ে চন্দন, দই, কাজল ও শিশিরের ফোঁটা দেন।
রায়গঞ্জের একটি গ্রিলের দোকানে কাজ করেন পার্থ। বিকাশ শহরের একটি পোশাকের দোকানের কর্মী। তাঁদের কথায়, দিদির হাত দিয়ে ফোঁটা দিতে খুব কষ্ট হয়। তাই এ বছর আমরাই তাঁকে পা দিয়ে ফোঁটা দিতে বলেছি। দিদির পায়ের স্পর্শই আমাদের আশীর্বাদ। তবে দিদি হাত দিয়েও আমাদের ফোঁটা দিয়েছেন।
শোভার বাবা মলিনবাবু রায়গঞ্জের এফসিআই মোড় এলাকার একটি মুরগির খাবারের দোকানে কাজ করেন। মা শান্তিদেবী গৃহবধূ। মেয়ে শোভা ২০০৫ সালে রায়গঞ্জের সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে স্নাতক উত্তীর্ণ হন।
শোভার কথায়, ‘‘জন্ম থেকেই আমার দু’টি হাত অসম্পূর্ণ ও আংশিক অসাড়। সংসারে আর্থিক অনটন থাকা সত্ত্বেও বাবা ও ভাইয়েরা অতীতে আমার চিকিত্সার কোনও খামতি রাখেননি। কিন্তু চিকিত্সায় কোনও ফল মেলেনি। কষ্ট হলেও পায়ে ফোঁটা দেওয়ার পাশাপাশি ভাইদের কপালে হাত ছুঁইয়েও তাঁদের মঙ্গল কামনা করেছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy