Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ছেলেধরা গুজবে মহিলাকে মারধর

জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সম্পাদক রাজেশ সিংহ বলেন, “বিজেপি ইচ্ছাকৃত ভাবে গোলমাল পাকাচ্ছে। যে পঞ্চায়েত সদস্যদের বাড়ির সামনে মারধর করা হয়েছে, তাঁরই তো উচিত ছিল মহিলাকে আশ্রয় দেওয়া। উল্টে তাঁরাই মারধরে যোগ দিয়েছিলেন।’’

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০২:২৭
Share: Save:

স্রেফ গুজবের জেরে গত ২৫ জুন ক্রান্তিতে ঘটেছিল গণপিটুনির ঘটনা। ঠিক একই ভাবে এ বার সেখান থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে ধূপগুড়িতে সোমবার ঘটল একই ঘটনা। ছেলেধরা গুজবে এক মহিলাকে গণপিটুনির অভিযোগ ধূপগুড়ির বারোঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বটতলায়। ঘটনায় নাম জড়াল জেলা বিজেপি সহ সভানেত্রীর। ওই মহিলাকে উদ্ধার করে ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে পুলিশ।

এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশও। ফুটেজে বিজেপির-সহ সভানেত্রী তারামণি রায়কে মারধর করতে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে। তাতে নামও রয়েছে বিজেপি নেত্রীর। বিজেপির দাবি, পুলিশ মিথ্যে মামলায় দলের নেত্রীকে জড়িয়েছে। মহিলাকে উদ্ধার করতেই তারামণি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বলে বিজেপির দাবি। তারামণির মন্তব্য, “২০০৮ সালে রাজনৈতিক কারণে আমার স্বামীকেও পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল। আমি গণপিটুনির ভয়াবহ পরিণাম জানি বলেই মহিলাকে বাঁচাতে গিয়েছিলাম। উল্টে পুলিশ আমাকেই ফাঁসাচ্ছে।”

বিজেপির জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য নরেশ রায়ের বাড়ির সামনেই মহিলাকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সম্পাদক রাজেশ সিংহ বলেন, “বিজেপি ইচ্ছাকৃত ভাবে গোলমাল পাকাচ্ছে। যে পঞ্চায়েত সদস্যদের বাড়ির সামনে মারধর করা হয়েছে, তাঁরই তো উচিত ছিল মহিলাকে আশ্রয় দেওয়া। উল্টে তাঁরাই মারধরে যোগ দিয়েছিলেন।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তীর দাবি, “তারামণি ওই মহিলাকে বাঁচাতে গিয়েছিল। পুলিশ মিথ্যে মামলা সাজাচ্ছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হয়েছে। যাদের নামে মামলা হয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হবে।”

বাসিন্দাদের দাবি, বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকায় ছেলেধরা নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছিল। সোমবার বিকেলে এলাকায় এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলাকে দেখা যায় বলে দাবি। বাসিন্দাদের কয়েকজন মহিলার কাছে পরিচয় জানতে চান। মহিলার কাছে একটি নার্সারি স্কুলের পড়ুয়ার পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। সন্ধে থেকে তা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা চলতে থাকে। তার পরেই মহিলাকে মারধর করা শুরু হয় বলে অভিযোগ। একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর শুরু হয় তাঁকে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় আর্তনাদ করলেও মারধর চলে। বাসিন্দাদের একাংশের তরফেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মহিলাকে উদ্ধার করে। বাসিন্দাদের কয়েকজনকে জেরা করে। পুলিশের দাবি, পরিকল্পনা করেই সন্ধ্যে থেকে গুজব ছড়িয়ে বাসিন্দাদের উত্তেজিত করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Mob Lynch
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE