নির্বাচন কমিশনের নিয়ম না মেনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ভুল নথি জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী নারায়ণ দাসের বিরুদ্ধে। শনিবার বিজেপির তরফে সর্বদলীয় বৈঠকে রায়গঞ্জের মহকুমাশাসকের কাছে এই অভিযোগ জানিয়ে লিখিত ভাবে ওই কংগ্রেস প্রার্থীর প্রার্থীপদ বাতিলের দাবি জানানো হয়। আগামী ২৫ এপ্রিল কালিয়াগঞ্জ পুরসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বিঘ্নে নির্বাচন শেষ করতে ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পর্কে সচেতন করতে এ দিন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কালিয়াগঞ্জের বিডিও অফিসে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। ওই বৈঠকেই বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী মহকুমাশাসক তথা মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে।
পেশায় প্রাক্তন ঠিকাদার নারায়ণবাবুর বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ভুল নথি জমা দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে তাঁর প্রার্থীপদ বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। শঙ্করবাবুর দাবি, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী পুরসভার ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তির যদি সংশ্লিষ্ট কাজ শেষ না হয়, তা হলে তিনি পুরসভা নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারেন না। নারায়ণবাবুর পুরসভার চারটি নির্মাণ কাজের সঙ্গে এখনও যুক্ত রয়েছেন। তাঁর ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ বাবদ টাকা এখনও পুরসভায় জমা রয়েছে। এরকম কোনও ব্যক্তি যদি নির্বাচনে দাঁড়াতে চান, তাহলে তাঁকে সরকারি পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে নিজের পুরসভা কেন্দ্রীক ঠিকাদারি ব্যবসা অন্য কাউকে হস্তান্তর করতে হবে।
শঙ্করবাবু বলেন, “নারায়ণবাবু সেই পদ্ধতিতে ঠিকাদারি সত্ত্ব ছেড়ে অন্য কাউকে হস্তান্তর করেননি। তিনি এফিডেভিটের মাধ্যমে মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে হলফনামা দিয়ে নিজের ঠিকাদারি সত্ত্ব ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সেই কারণে আমরা তাঁর প্রার্থীপদ বাতিলের দাবি জানালাম।”
এ দিন কালিয়াগঞ্জ পুরসভার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে প্রশাসন। কারও প্রার্থীপদ বাতিল হয়নি। পুরসভার মোট ১৭টি আসনেই কংগ্রেস, বামফ্রন্ট, তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে। একটি আসনে নির্দল ও দু’টি আসনে সিপিআইএমএল প্রার্থী দিয়েছে। রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক তথা মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিক বিপুলকুমার বিশ্বাস বলেন, “বিজেপির অভিযোগ খতিয়ে দেখে নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সিপিএমের কালিয়াগঞ্জ জোনাল সম্পাদক দেবব্রত সরকার ও কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল সভাপতি জয়ন্ত সাহা পৃথক ভাবে হলেও একই সুরে জানান, নারায়ণবাবু নির্বাচন কমিশনের আইন মেনে মনোনয়নপত্র দাখিল করে না থাকলে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিক। যদিও বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নারায়ণবাবু। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের আইন মেনেই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সমস্ত নথি দাখিল করেছি। ওয়ার্ডে জনসমর্থন না থাকায় বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।”
পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা কালিয়াগঞ্জ শহর কংগ্রেস সভাপতি অরুণ দে সরকারেরও দাবি, “নারায়ণবাবু নির্বাচন কমিশনের আইন মেনেই নিজের ঠিকাদারি সত্ত্ব ছেড়ে একটি সংস্থাকে হস্তান্তর করেছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy