এই ছবিতেই বেধেছে বিতর্ক।
একটি বনবিড়াল ধরার পরে তার মাংস দিয়েই পিকনিকের আয়োজন করে একদল যুবক। বুধবার দুপুরে জলঢাকা নদীর চরে এই কাণ্ড হয়েছে বলে ওই যুবকেরা নিজেরাই দাবি করেছে। তাদের এক জনের ফেসবুকে ওই বিড়ালটিকে কেটে কুটে, মশলা দিয়ে মেখে, রান্না করে, চেটেপুটে খাওয়ার ছবি ফলাও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় তারা। ফেসবুকে ওই পোস্ট ছড়াতেই নিন্দার ঝড় বইতে থাকে। এতে ঘাবড়ে গিয়ে ওই যুবক পোস্টটিকে কিছু ক্ষণের মধ্যেই মুছে দেয়।
তবে তার আগেই ঘটনাটি বনদফতরের নজরে চলে আসে। উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণী বিভাগের বনপাল সুমিতা ঘটক বলেন, ‘‘বন বিড়াল বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। যারা এই অন্যায় কাজ করেছে, তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘সংরক্ষণের নিরিখে ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে বন বিড়াল দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রাণী (তফসিল ২)। দেশের যে কোনও বন্যপ্রাণী, তা সে জঙ্গলে হোক বা লোকালয়ের আশেপাশে, তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দ্যনীয়।’’
খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে জলঢাকা নদীর চরে স্থানীয় কিছু যুবক ওই পিকনিক আয়োজন করে। পিকনিকের প্রধান মেনুই ছিল বন বিড়ালের মাংস। এলাকার বাসিন্দারা জানান, জলঢাকার পাশেই রামসাই জঙ্গল। ওই জঙ্গল থেকে মাঝে মধ্যে হরিণ, ময়ূর সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। অধিকাংশ সময়েই স্থানীয়রা বিপন্ন প্রাণীগুলিকে উদ্ধার করে বনদফতরের হাতে তুলে দেন। কিন্তু ওই যুবকরা তা করেনি। উলটে জঙ্গল থেকে বের হওয়া বন বিড়ালটিকে ধরে তার মাংস খাওয়ার মতলব আঁটেন। বুধবার দুপুরে জলঢাকা নদীর চরে দশ বারো জন যুবক ওই বিড়ালটিকে নিয়ে যায়। সেখানে ওই প্রাণীটিকে পায়ে দড়ি বেঁধে, গাছে ঝুলিয়ে ছাল ছাড়িয়ে কাটা হয়। তারপর সেটিকে রান্না করে চলে পিকনিক।
ফেসবুকে ছবি যে পোস্ট করেছিল, সেই যুবক ধূপগুড়ির একটি কলেজের ছাত্র। এই এলাকাতেই তার বাড়ি। তবে সে এমন কোনও কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেনি। তার বন্ধুবান্ধবেরাও করেনি। ধূপগুড়ি থানার আইসি সুবীর কর্মকার বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনও খবর আমাদের কাছে নেই। তবে খোঁজ নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy