অপেক্ষা: এটিএমের সামনে দীর্ঘ লাইন। কোচবিহারে মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
সকাল থেকেই হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন কেউ কেউ। কেউ আবার লম্বা লাইনে ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন। এটিএমে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে কারও কারও মনে পড়ছিল নোটবন্দির কথা।
মঙ্গলবার মাসের প্রথমদিন। স্বাভাবিক ভাবেই এটিএম কাউন্টিরগুলিতে মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করে। সকাল থেকেই শহর ও শহর লাগোয়া কোনও এটিএমে টাকা ছিল না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। বেলা সাড়ে ১০টার পরে কোচবিহার শহরের সাগরদিঘি পাড় এবং হরিশপাল লাগোয়া দু’টি এটিমে টাকা রয়েছে বলে খোঁজ পেতেই সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। গ্রাহকদের অনেকেই অভিযোগ করেন, নোটবন্দির সময় দীর্ঘদিন এমন অবস্থা হয়েছিল। অধিকাংশ এটিএমে টাকা ছিল না। এ দিন সেই অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ল অনেকের।
এ দিন কোচবিহারের সাগরদিঘি পাড়ে একটি এটিএম কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জয়দীপ দাস। তখন সূর্য মাঝ আকাশে। জয়দীপ বললেন, “সকাল থেকে অন্তত কুড়িটি এটিএমে ঘুরেছি। কোথাও টাকা নেই। এখানে লাইন দেখে দাঁড়ালাম। জানি না টাকা পাব কি না।” কোচবিহারের নতুন বাজারের কাছে একটি এটিএম থেকে বেরোচ্ছিলেন রাজেশ রায়। তিনি বললেন, “গত তিনদিন ধরে আমি এটিএমে টাকা পাচ্ছি না। একের পর-এক এটিম ঘুরেই যাচ্ছি। এমন হলে কী করে চলবে। খুবই অসুবিধেয় পড়েছি।” আর-এক গ্রাহক ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে টাকার প্রয়োজন হচ্ছে। এমন সময় এটিএম ফাঁকা থাকলে চলবে কী করে?”
কোচবিহারের লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কয়েকদিন ছুটি থাকায় একটু সমস্যা হয়েছিল। এ দিন সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
অভিযোগ উঠতে শুরু করে গত রবিবার থেকেই। ওইদিন থেকেই অধিকাংশ এটিএম টাকা শূন্য হয়ে যায় বলে অভিযোগ। গ্রাহকরা দাবি করেছেন, একাধিক এটিএমের সামনে ‘নো ক্যাশ’ বোর্ড টাঙিয়ে রাখা হয়েছে। বেশ কিছু এটিএমে মেশিনে হাতে দিলেই লেখা উঠছে, ‘আউট অফ ক্যাশ।’ কেন টাকা নেই, তা ঠিক করে কেউ জানতে পারেননি। সোমবারও একই পরিস্থিতি ছিল বলে অভিযোগ।
এ দিন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, শনিবার ও রবিবার ছুটি ছিল। সোমবারও গুরু নানকের জন্মদিনের জন্য বন্ধ ছিল ব্যাঙ্ক। তার আগে একদিন ধর্মঘটও হয়েছে। সবমিলিয়ে এটিএম কাউন্টারগুলি ফাঁকা হয়ে পড়ে। এ দিন অফিস খুলতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এটিএম কাউন্টারে টাকা ভরার কাজও শুরু হয়। দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে বলে তাঁরা দাবি করেন। গ্রাহকদের দাবি, এমন ক্ষেত্রে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy