Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

উদ্ধার হল বিজেপি অঞ্চল সভাপতির দেহ, বিতর্ক

বিজেপির অঞ্চল যুব সভাপতির দেহ উদ্ধার নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। শুক্রবার সকালে কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার মহিষবাথান এলাকায় বাড়ির অদূরে রাস্তার ধারের একটি ধান খেত থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম বিষ্ণু সরকার (৩৫)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৯
Share: Save:

বিজেপির অঞ্চল যুব সভাপতির দেহ উদ্ধার নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। শুক্রবার সকালে কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার মহিষবাথান এলাকায় বাড়ির অদূরে রাস্তার ধারের একটি ধান খেত থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম বিষ্ণু সরকার (৩৫)। বিজেপির দাবি, বিষ্ণুকে খুন করে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে গিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। নিহতের পরিবারের তরফেও ওই মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বিজেপির যুব সভাপতির।

দুই পক্ষের মতবিরোধকে ঘিরে এদিন সকালে উত্তেজনা তৈরি হয় এলাকায়। বিজেপির ব্লক কমিটির সদস্য বুধেশ্বর বর্মনকে সে সময় তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর অনুগামীরা মারধর করেন বলে অভিযোগ। পুলিশের সামনেই তৃণমূলের ওই সদস্যরা তাঁকে খুনের হুমকি দিয়েছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে বাইক দুর্ঘটনা থেকে মৃত্যু হতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। কেউ অভিযোগ জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এলাকার বাসিন্দারা জানান, এক সময় বিষ্ণু তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মাস ছয়েক আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন বলে দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, তাঁকে যুব সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় মাস তিনেক আগে। বিজেপির দাবি, দায়িত্ব পাওয়ার পর এলাকায় সংগঠন বাড়াতে কাজ শুরু করেন বিষ্ণু। তার পর থেকেই তাঁর উপর হামলা শুরু হয় বলে অভিযোগ দলের।

কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে অভিযোগ করেন, মাস দুয়েক আগে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে বিষ্ণুকে বিজেপি ছাড়তে বলে মারধর করেন। দিন দশেক আগে মহিষবাথান বাজারে তৃণমূলের কয়েকজন কর্মী বিষ্ণুকে খুনের হুমকি দেয় বলেও দাবি করেছেন তিনি। বিষ্ণুর বাবা গণেশবাবু জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা নাগাদ একটি ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয় বিষ্ণু। প্রতিদিন রাত ১১ টার মধ্যে বাড়ি ফেরেন তিনি। ওই দিন না ফেরায় তাঁর মোবাইল ফোন যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন তাঁরা। মোবাইল ফোনের সুইচ বন্ধ ছিল। চারিদিকে খোঁজাখুজি করেও তাঁর খোঁজ পাননি তাঁরা। সকালে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি মসজিদের পাশে তাঁর মৃতদেহ পড়ে রয়েছে বলে প্রতিবেশীদের কাছে জানতে পারেন। গণেশবাবু বলেন, “যেখানে বাইক নিয়ে পড়েছিল বিষ্ণু, সেখানে একটি কচু গাছও ভাঙেনি। আশেপাশের কেউ টের পেল না বাইক পড়ার শব্দ! সে সব নিয়ে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে।”

গণেশবাবুর মতোই বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বিজেপির নেতা বুধেশ্বরবাবু। তিনি দাবি করেন, তাঁর গলায়, পিঠে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বুধেশ্বরবাবুর ডেকরেটরের দোকান রয়েছে। তিনি বলেন, “যত রাতই হোক, বিষ্ণু আমার দোকানে একবার আসতেন। এদিন আসেননি। আর বাইক দুর্ঘটনা হলে কমপক্ষে একটি শব্দ হবে। মানুষ জানবে। তা হয়নি। আমাকেও নানা হুমকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাব।”

পুলিশ বিষ্ণুবাবুর মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে। তৃণমূলের কোচবিহার ১ নম্বর ব্লক সভাপতি খোকন মিয়াঁ বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেন, “নিছকই একটি বাইক দুর্ঘটনা থেকে ওই ঘটনা ঘটেছে। তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তাঁর পরিবারের লোকের কোনও অভিযোগ নেই। বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলছে রাজনীতি করার জন্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bjp dead body cooch behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE