মেদিনীপুর জেলে বন্দি এক ব্যক্তি ফোন করে দমকল বিভাগের শিলিগুড়ির এক অফিসারকে প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, ডিজি পদমর্যাদার এক পুলিশকর্তার নাম করে ওই অফিসারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ মেদিনীপুর থেকে শ্রীমন্ত সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করেছে। দমকলের ওসি ব্যাঙ্ক মারফত মেদিনীপুরে যে টাকা পাঠিয়েছেন, তা তিনি তুলেছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের খবর, শ্রীমন্তবাবু জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে মেদিনীপুর জেলে বন্দি। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে তিনি জানিয়েছেন, ছেলের কথা মতোই ব্যাঙ্কে গিয়ে ওই টাকা তিনি তুলেছিলেন।
এই ঘটনার পরে জেলে বসে মোবাইলে নানা জায়গা থেকে টাকা তুলতে একটি চক্র ফের সক্রিয় হয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ ও কারা দফতর। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, “দমকলের অফিসারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারণার মামলা রুজু হয়েছে।”
পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির স্টেশন ফিডার রোডের দমকলের অফিসে ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে দমকলের ওসির কাছে একজন ফোন করে দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে ডিজি পদমর্যাদার এক অফিসার কথা বলতে চান। সে জন্য একটি মোবাইল নম্বরও তাঁকে দেওয়া হয়। হঠাৎ করে কেন ডিজি পদমর্যাদার এক অফিসার তাঁকে ফোন করতে বলবেন সেটা ভেবে ওসি উদ্বিগ্ন হন। ইতিমধ্যে ওই মোবাইল নম্বর থেকে ওসির কাছে ফোন পৌঁছয়। ওসির অভিযোগ, সেই ফোনে তাঁকে জরুরি কারণে শিলিগুড়ির একটি ব্যাঙ্কে ৫০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সে জন্য একটি অ্যাকাউন্ট নম্বরও দেওয়া হয় বলে ওসির দাবি। দমকল সূত্রের খবর, গোড়ায় সন্দেহ হলেও ওই অফিসার দ্রুত ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে ব্যাঙ্কে জমা দেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে ফের ওই মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে আরও ২৫ হাজার টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে ওই ওসি পুলিশের কাছে জানান। সেই সময়ে ওসি কলকাতায় যোগাযোগ করে ডিজি পদমর্যাদার অফিসারের মোবাইল নম্বর মিলিয়ে দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন তাঁকে ঠকিয়ে ওই টাকা হাতানো হয়েছে। ওই দিনই দমকলের ওসির অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয় শিলিগুড়ি থানায়। পুলিশ জানতে পারে, মেদিনীপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ওই টাকা তোলা হয়েছে। ব্যাঙ্কের ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে শ্রীমন্তবাবুকে গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি পুলিশ।
কারা দফতর জানিয়েছে, মেদিনীপুর সংশোধনাগার থেকে খবর নেওয়া হচ্ছে। অবশ্য জেলে প্রতারণা চক্র সক্রিয় থাকার বিষয়টি কারা দফতর উড়িয়ে দিতে পারেনি। কারণ, সাম্প্রতিক অতীতে দক্ষিণ ২৪ পরগণায় এক ওয়ার্ডারকে সাসপেন্ড করা হয়। অভিযোগ, তিনি অফিসে বসে ফোন করে ওসিদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন। এর পরে মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলের ভিতর থেকে ফোন করে একজন এসডিপিও পদমর্যাদার অফিসারের কাছ থেকেও টাকা আদায়ের চেষ্টা হয়। সাম্প্রতিক ঘটনায় সংশোধনাগার থেকে ফোন হয়ে থাকলে কারা দফতরের কারও যুক্ত থাকার সম্ভাবনাও জোরদার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy