Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জেলা সভাধিপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তৃণমূলেরই নেত্রীর

তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং সহকারি সভাধিপতির বিরুদ্ধে পরিকল্পনা বহির্ভূত কাজ ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠল। দলেরই এক নেত্রী তা তোলায় প্রকাশ্যে এসেছে দলের কোন্দলও। কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্যা এক তৃণমূল নেত্রী-ই ওই অভিযোগ তুলে সোমবার জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের সময়েই এমন অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছে দল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:১২
Share: Save:

তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং সহকারি সভাধিপতির বিরুদ্ধে পরিকল্পনা বহির্ভূত কাজ ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠল। দলেরই এক নেত্রী তা তোলায় প্রকাশ্যে এসেছে দলের কোন্দলও।

কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্যা এক তৃণমূল নেত্রী-ই ওই অভিযোগ তুলে সোমবার জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের সময়েই এমন অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছে দল। জেলা পরিষদের ওই সদস্যা হাসিনা রব্বানি বেগমের অভিযোগ, সহকারি সভাধিপতি ললিত প্রামাণিক তাঁর বাড়ির সামনের ৫০০ মিটার রাস্তা গোপনে পাকা করার অনুমোদন করিয়েছেন। গত বছর একটি রাস্তা করার নামে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় রাস্তা তৈরির জন্য যে তালিকা জেলা পরিষদে জমা দিচ্ছেন তা উধাও হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ ওই সদস্যার।

কোচবিহার জেলা পরিষদে ৩৩টি আসনের মধ্যে ২৭টি আসন দখল করেছিল তৃণমূল। জেলা পরিষদের কাজকর্ম নিয়েও কখনও সরব হতে দেখা যায়নি বিরোধীদেরও। সেখানে তৃণমূলেরই এক সদস্য এমন অভিযোগ তোলায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। দলীয় সূত্রে যদিও দাবি করা হয়েছে, সহকারি সভাধিপতির সঙ্গে বিরোধের জেরেই এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া এবং সহ সভাধিপতি ললিতবাবু অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পুষ্পিতাদেবী বলেন, “মিথ্যে ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে কাজ করছে জেলা পরিষদ। এখানে পরিকল্পনা বহির্ভূত কাজ ও স্বজনপোষণের জায়গা নেই।”

হাসিনা রব্বানি জোরপাটকি এলাকা থেকে জয়ী হয়েছেন ওই এলাকার শিবপুরে সহকারি সভাধিপতি ললিতবাবুর বাড়ি। তিনি মাথাভাঙা-২ নম্বর থেকে জয়ী হয়েছেন। বর্তমানে শহরে থাকলেও ওই ঠিকানা ছাড়েননি। ললিতবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর বাড়ির ডান ও বাম পাশে দুটি পাকা রাস্তা রয়েছে। তার পরেও তিনি বাড়ির ঠিক সামনে ৫০০ মিটার দূরত্বের রাস্তা পাকা করার পরিকল্পনা পাশ করিয়েছেন। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবপুর হরিমন্দির থেকে ঝিনাইকুড়ি মেলা পর্যন্ত বালি পাথর দিয়ে সংস্কারের কাজে ১৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, রাস্তা করার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। বাকি টাকা আত্মসাত্‌ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, আটটি রাস্তার কাজের অনুমোদন হওয়ার পরে এক বছর হতে চললেও কোনও কাজ হচ্ছে না বলে দাবি তাঁর। জেলা পরিষদের গীতাঞ্জলী এবং সংখ্যালঘু প্রকল্পের ঘর বিলি নিয়েও দুর্নীতি হচ্ছে বলে দাবি করে ওই সদস্যার দাবি, “ওই রাস্তাগুলি চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। সেই সব রাস্তা না করে আমরা যদি আমাদের বাড়ির সামনে পাকা রাস্তা তৈরি করা করি সেটা কি ঠিক হয়?” ললিতবাবু বলেন, “সভাধিপতি বা সহকারি সভাধিপতির গোটা জেলায় কাজ করার অধিকার আছে। সে হিসেবেই যেখানে প্রয়োজন করা হচ্ছে। ওই অভিযোগের পিছনে অন্য কোনও অভিসন্ধি থাকতে পারে।”জেলা পরিষদের ওই সদস্য হাসিনা রব্বানি বেগম মাথাভাঙার শ্রমিক তৃণমূলের নেতা আলিজার রহমানের স্ত্রী। আলিজার রহমান বলেন, “একশ্রেণির ঠিকাদারদের সঙ্গে গোপন আঁতাত রয়েছে সভাধিপতি ও সহকারি সভাধিপতির। ব্যক্তিস্বার্থের কথা ভেবে তাঁরা কাজ করছেন।” হাসিনা রব্বানির ক্ষোভ, “জেলা পরিষদে একনায়কতন্ত্র চলছে।” দলের কোচবিহার জেলা সহ সভাধিপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “দলের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। সভাধিপতি বা সহ সভাধিপতি ভাল কাজ করছেন। কেউ কোনও অভিযোগ জানালে আলোচনা করে মেটানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

president tmc complaint cooch behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE