Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ব্যাঙ্ক ঋণ না পেয়ে সমস্যায় চা চাষিরা

ব্যাঙ্কের ঋণ না মেলায় বিপাকে পড়েছেন জলপাইগুড়ি জেলার অন্তত ২০ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি। তাঁদের অভিযোগ, বিভিন্ন অছিলায় রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখাগুলি তাঁদের ঋণ দিতে অস্বীকার করছে। বিষয়টি ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট (নাবার্ড) কর্তাদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলেও চাষিদের অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৩১
Share: Save:

ব্যাঙ্কের ঋণ না মেলায় বিপাকে পড়েছেন জলপাইগুড়ি জেলার অন্তত ২০ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি। তাঁদের অভিযোগ, বিভিন্ন অছিলায় রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখাগুলি তাঁদের ঋণ দিতে অস্বীকার করছে। বিষয়টি ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট (নাবার্ড) কর্তাদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলেও চাষিদের অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে অনেক চাপানউতরের পরে জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক এগিয়ে আসায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন জেলার ক্ষুদ্র চা চাষিদের একাংশ। ওই সমবায় ব্যাঙ্ক আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানা গেছে।

জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখায় আবেদন করে ঋণ মিলছে না। তাই চাষিরা চড়া সুদে বাইরে থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে। বিষয়টি নাবার্ড কর্তাদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” যদিও নাবার্ডের জেলা উন্নয়ন ম্যানেজার গণেশচন্দ্র বিশ্বাস জানান, ওই বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। তিনি বলেন, “নাবার্ড সরাসরি ঋণ দেয় না। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা করে,। ক্ষুদ্র চা চাষিদের কেন ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বুঝতে পারছি না। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের সিনিয়র ম্যানেজারদের নিয়ে বৈঠকে সমস্যার কথা তুলে ধরে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”

এদিকে নাবার্ডের অনুমতি নিয়ে জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক ঋণ দিতে এগিয়ে আসায় ক্ষুদ্র চা চাষিরা খুশি। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী জানান, “ক্ষুদ্র চা চাষিদের ঋণ দেওয়ার জন্য নাবার্ডের কাছে অনুমতি চেয়ে বেশ কিছুদিন আগে ব্যাঙ্কের তরফে আবেদন করা হয়। কিন্তু অনুমতি না মেলায় সেটা সম্ভব হচ্ছিল না। কয়েকদিন আগে অনুমতি মেলে।”

গত মঙ্গলবার ওই বিষয়ে সভা করে ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কের নিজস্ব একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়ে সৌরভবাবু বলেন, “ক্ষুদ্র চা চাষিদের ঋণ দেওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। সমবায় ব্যাঙ্কের অনুমতি ছিল না। দেরিতে হলেও সেটা মিলেছে।” ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, মনিটরিং কমিটি সবদিক খতিয়ে দেখে ঋণের ব্যবস্থা করবে। জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক জানান, সমবায় ব্যাঙ্ক এগিয়ে আসায় সমস্যা কিছুটা হলেও মিটবে। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ২০ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি রয়েছে। ৩০ হাজার একর জমিতে তাঁরা বছরে ৩০ কোটি কেজি সবুজ পাতা উৎপাদন করেন। গত বছর অগস্ট মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত কাঁচা পাতার দাম কেজি প্রতি ৪ টাকায় নেমে আসায় এবার চাষিরা শীতকালীন বাগান পরিচর্যার কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন।

চাষিদের অভিযোগ, এই মুহূর্তে ঋণ দরকার কিন্তু কৃষি ক্ষেত্রে জেলায় হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হলেও ব্যাঙ্কের তরফে এমন সমস্ত নথি চাওয়া হচ্ছে যেগুলি তাঁদের কাছে নেই। যেমন, নো অবজেকশন সার্টিফিকেট। রাজ্য সরকারের তরফে ২০০৯ সালের পরে কোনও সমীক্ষা না হওয়ায় ওই সার্টিফিকেট বেশিরভাগ চাষি দিতে পারছে না বলে দাবি করেছেন। নাবার্ডের জেলা ডেভলাপমেন্ট ম্যানেজার বলেন, “এটা হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।” জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বলেন, “একে পাতার দাম মেলেনি। তাঁর উপরে ঋণের সুবিধা নেই নাবার্ড কর্তারা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি বেসামাল হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nabard jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE