Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বধূ খুনে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা, পথ অবরোধ

পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বধূকে খুন করেছে বলে রাতেই পুলিশে খবর দিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সকালে স্বামী-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান বধূর বাপের বাড়ির লোকজন। তার পরেও পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে না আসায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আড়াই ঘণ্টা কড়িয়ালি-মালদহ রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচল থানার চাঁদপুর এলাকায়।

কড়িয়ালি-মালদহ রাজ্য সড়ক অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

কড়িয়ালি-মালদহ রাজ্য সড়ক অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৫ ০২:১৪
Share: Save:

পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বধূকে খুন করেছে বলে রাতেই পুলিশে খবর দিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সকালে স্বামী-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান বধূর বাপের বাড়ির লোকজন। তার পরেও পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে না আসায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আড়াই ঘণ্টা কড়িয়ালি-মালদহ রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচল থানার চাঁদপুর এলাকায়। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিক্ষোভের মুখে পড়ে। যথাযথ তদন্ত-সহ পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেওয়ায় দুপুর একটা নাগাদ অবরোধ ওঠে। দীর্ঘ ক্ষণ রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। ঘটনায় অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।

চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “পণ না দেওয়ায় ওই বধূকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ তদন্ত করছে। কেন পুলিশ দেহ উদ্ধারে যেতে দেরি করল তা খতিয়ে দেখছি। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”

পুলিশ জানায়, নিহত বধূর নাম সুরাতন বিবি (২৬)। হরিশ্চন্দ্রপুরের লতাশির বাসিন্দা সুরাতনের পাঁচ বছর আগে চাঁদপুরের বাসিন্দা শিস মহম্মদের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের দুই নাবালক ছেলে-মেয়েও রয়েছে। শিস চাষের কাজ করে। সুরাতনের বাবা মহম্মদ শাকিরের অভিযোগ, বাপের বাড়ি থেকে একটি মোটরবাইক ও টাকা নিয়ে আসার জন্য গত তিন মাস ধরে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা সুরাতনের উপরে নির্যাতন চালাচ্ছিল। মোটরবাইক না পেলে শিস দ্বিতীয় বার বিয়ে করার হুমকিও দেয়। তা নিয়ে বচসার জেরেই শুক্রবার রাতে সুরাতনকে প্রথমে বেধড়ক মারধর করে পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে তাঁর অভিযোগ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খুন হওয়ার আগে সুরাতন প্রাণপণ বাঁচার চেষ্টা করে। তাদের বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শোনেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তাঁর গলায় ও শরীরেও আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রাথমিক পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করা হয়েছে। রাতেই ঘটনা জানাজানি হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রথমে সুরাতন আত্মহত্যা করেছে বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। রাত ১২টা নাগাদ পুলিশকে বধূ খুনের কথা টেলিফোনে তাঁরা জানান বলে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি। পরিস্থিতি আঁচ করে সকালে পরিবারের প্রত্যেকেই বাড়ি ছেড়ে পালায় বলে পুলিশের সন্দেহ।

বধূর শ্বশুরবাড়ি লাগোয়া এলাকাতেই তার বাপের বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দা আবু তালহা, সামেদ আলিরা বলেন, “রাতেই পুলিশকে জানানো হয়েছিল। সকালে লিখিত অভিযোগও করা হয়। তার পরেও পুলিশ আসতে দেরি করায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা পথ অবরোধ শুরু করেন।”

মৃতার বাবা ক্ষুদ্র কৃষক। তিনি বলেন, “বিয়ের সময় ৫০ হাজার টাকা পণ দিয়েছিলাম। তার পরেও মেয়েকে চাপ দেওয়া হতো। কিন্তু এর জন্য মেয়েকে খুন করে ফেলবে, তা ভাবতে পারিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dowry murder chanchal malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE