মোবাইল ফোন কানে লাগিয়ে মোটরবাইক নিয়ে চলাচল করার সময় ধরা পড়লে চালককে গুনতে হবে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানায়। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নতুন মোটর ভেহিকলস আইন মেনে ওই নিয়ম চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে জলপাইগুড়ি ট্রাফিক পুলিশ।
পথ দুর্ঘটনা এড়াতে ২৬তম জাতীয় পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে নতুন নির্দেশিকা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চলছে জাতীয় পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ। অনুষ্ঠান চলবে শনিবার পর্যন্ত। জলপাইগুড়ির ট্রাফিক পুলিশ ওসি সৈকত ভদ্র বলেন, “নতুন নির্দেশিকা চালু করা হবে। সেখানে জরিমানা দশ গুণ বৃদ্ধি হয়েছে।” তিনি জানান, শুধু মোবাইল ফোন কানে মোটরবাইক চালানো নিয়ে জরিমানা বৃদ্ধি নয়, মদ্যপ অবস্থায় যে কোন গাড়ি চালাতে গিয়ে ধরা পড়লে চালককে গুনতে হবে ২৫ হাজার টাকা।
শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, বিকালের পরে শুরু হয় নেশাগ্রস্ত কিছু যুবকের ঝড়ের গতিতে বাইক নিয়ে দাপাদাপি। কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। নতুন নিয়ম চালু হলে নেশাগ্রস্থদের বাইকের দৌরাত্ম্য কমবে। ট্রাফিক পুলিশ কর্তাদের অভিযোগ, “হেলমেট পড়ে বাইক চালানো বাধ্যতামূলক হলেও অনেকে সেটা মানছেন না। ওই কারণে দুর্ঘটনায় চালক মারাত্মকভাবে জখম হচ্ছেন।”
তাঁরা জানান, এই বিপদ এড়াতে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে হেলমেট ছাড়া বাইক নিয়ে রাস্তায় ধরা পড়লে চালককে এক হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। বর্তমানে সেটা একশো টাকা থেকে তিনশো টাকা রয়েছে। একই ভাবে ছোট চার চাকার গাড়ি চালানোর সময় সিট বেল্ট ব্যবহার না করলে চালককে এক হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে।
ট্রাফিক পুলিশ কর্তারা জানান, মোটর ভেহিকলস আইনের ১৮১ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো অপরাধ। এজন্য তিন মাসের জেল এবং পাঁচশো টাকা জরিমানার কথা বলা আছে। সামান্য জরিমানা দেখে অনেকে আইনের তোয়াক্কা করছে না বলে অভিযোগ। সেই কারণে নতুন নিয়মে জরিমানা বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। বিমার নথিপত্র ঠিকঠাক দেখাতে না পারলে একই পরিমাণ জরিমানা গুনতে হবে।
ট্রাফিক পুলিশ ওসি জানান, একই অপরাধে কোন ব্যক্তি তিনবার ধরা পড়লে তাঁর লাইসেন্স সারা জীবনের জন্য বাতিল হবে। বারবার একই অন্যায় করে জরিমানা দিয়ে পাড় পেয়ে যাওয়া শহরের বাইক চালক যুবকদের একাংশের প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন নিয়মে ওই সুযোগ থাকছে না। একই ভুল তিনবার করলে লাইসেন্স বাতিল হবে। এর পরে বাইক নিয়ে রাস্তায় নেমে ধরা পড়লে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। জলপাইগুড়ি নাগরিক মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক তথা আইনজীবী তপন ভট্টাচার্য বলেন, “জরিমানা বেড়ে যাওয়ায় বাইক চালকদের মনে ভয় থাকবে। আশা করছি, এতে দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও কমবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy