টিউশন পড়তে যাওয়ার পথে অ্যাসিড হামলার শিকার হলেন দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। অ্যাসিড ছোড়ার পাশাপাশি ওই স্কুলছাত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়েও আঘাত করে মোটরবাইকে করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতী। শনিবার দুপুর ৩টে নাগাদ রায়গঞ্জের সেবকপল্লি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। জখম ছাত্রীকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ওই ছাত্রীর জবানবন্দি নিয়েছে। ছাত্রীর পরিবারের তরফেও রায়গঞ্জ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাতে এক স্কুলছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের আটক করেছে পুলিশ। তার বাড়ি রায়গঞ্জ কলেজপাড়ায়।
ওই ছাত্রীর দাবি, অভিযুক্ত যুবকের মুখ মাফলার দিয়ে ঢাকা থাকায় তাঁকে চেনা যায়নি। বাসিন্দারা ঘটনাস্থল থেকে একটি ফ্লাক্স উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই ফ্লাক্সে অ্যাসিড আনা হয়েছিল। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “অভিযুক্ত যুবককে চিহ্নিত করে তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। কী কারণে ওই ছাত্রীর উপর হামলা হল, তাও তদন্ত করা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রী রায়গঞ্জের উকিলপাড়া এলাকার একটি হাইস্কুলে পড়াশোনা করে। এখানেই একটি মেয়েদের হস্টেলে থাকে সে। ওই ছাত্রীর কথায়, “আমি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের পাশের একটি গলি দিয়ে হেঁটে শিক্ষকের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। সেইসময় মুখে মাফলার জড়ানো অবস্থায় এক যুবক মোটরবাইকে চড়ে এসে আমাকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছোড়ে। শরীরের ডানদিকে চুড়িদারের উপর অ্যাসিড পড়ে। আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জ্বালা শুরু হয়। প্রাণভয়ে আমি চিত্কার শুরু করি। সেই সময় ওই যুবক স্ক্রু ডাইভার জাতীয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আমার বুকের ডানদিকে আঘাত করে দ্রুতগতিতে মোটরবাইক চালিয়ে পালিয়ে যায়। এর পর আর আমার কিছুই মনে নেই।”
ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সেবকপল্লি এলাকার বাসিন্দা তথা সিপিএম নেতা ছোটন মিত্র বলেন, “বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন হঠাত্ করে দেখলাম একটি মেয়ে রাস্তার উপর পড়ে গেল। দেখলাম এক যুবক মোটরবাইক চালিয়ে পালিয়ে গেল। পরে বুঝলাম ওই ছাত্রীর গায়ে অ্যাসিড ছোড়া হয়েছে। বাসিন্দাদের সহযোগিতায় জখম অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, অ্যাসিড গায়ে পড়লেও ওই ছাত্রীর শরীরের কোনও অংশ বিশেষ পুড়ে যায়নি। তবে তাঁর বুকের ডানদিকে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। ওই ছাত্রীর মামা বলেন, “দিনে দুপুরে এভাবে হামলা হবে তা বিশ্বাস করতে পারছি না।” ওই ঘটনায় ছাত্রীর সহপাঠীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy