Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

১০০ দিনের কাজে মাটির গ্যালারিও

মাটির গ্যালারিতে বসে খেলা দেখবেন দর্শকেরা। এমনই কাণ্ড ঘটছে রামপুরহাটের ভাঁড়শালাপাড়া দিঘিরপাড়ের মাঠের। বছরে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে ওই মাঠের ভোল বদলানোর প্রয়াস শুরু হয়েছে জোরকদমে।

সংস্কার: চলছে মাটির স্টেডিয়াম তৈরির কাজ। রামপুরহাটের ভাঁড়শালাপাড়া দিঘিরপাড়ের মাঠে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

সংস্কার: চলছে মাটির স্টেডিয়াম তৈরির কাজ। রামপুরহাটের ভাঁড়শালাপাড়া দিঘিরপাড়ের মাঠে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাদা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

মাটির গ্যালারিতে বসে খেলা দেখবেন দর্শকেরা। এমনই কাণ্ড ঘটছে রামপুরহাটের ভাঁড়শালাপাড়া দিঘিরপাড়ের মাঠের। বছরে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে ওই মাঠের ভোল বদলানোর প্রয়াস শুরু হয়েছে জোরকদমে।

অতীতে ভাঁড়শালাপাড়ায় কোনও খেলার মাঠ ছিল না। দিঘির পাড়ের উঁচুনিচু জমিতে স্থানীয় মানুষ সকাল দুপুর বিকেলে তাস খেলতে বসতেন। ধীরে ধীরে সেই জমিকেই খেলার মাঠে পরিণত করে স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার যুবকরা জোটবদ্ধ হয়ে খেলার মাঠে তাস পেটানো বন্ধ করেন। পরবর্তীতে খেলাধুলোর চর্চা করার জন্য এলাকার দিঘিরপাড়কেই খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহার করতে থাকেন স্থানীয় যুবকেরা। বর্তমানে সেই মাঠে রামপুরহাট হাসপাতালপাড়া, ভাঁড়শালাপাড়া, জয়কৃষ্ণপুর, দিঘিরপাড়, বামনিগ্রাম-সহ আরও এলাকার বাসিন্দারা নিয়মিত খেলাধুলো চর্চা করেন। এখানেই প্রাতর্ভ্রমণে আসেন অনেকে।

স্থানীয় দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে ১০০ দিনের প্রকল্পে দিঘিরপাড়ের সেই মাঠ সংস্কারের কাজ চলছে। বিডিও (রামপুরহাট ১) দীপান্বিতা বর্মন বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে মাঠ সংস্কারের জন্য আবেদন জানিয়ে এসেছেন। ১০০ দিন প্রকল্পে সংস্কারের কাজ চলছে। মাঠে দর্শকদের বসার জন্য মাটির গ্যালারি করা হচ্ছে। মাঠের সৌন্দর্যায়নও করা হবে।’’ আগামী দিনে মাঠে বনসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা আছে বলেও বিডিও জানিয়েছেন। মাঠ সংস্কার, মাটির গ্যালারি তৈরি-সহ অন্যান্য কাজের জন্য ৯ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩০৭ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ পিয়ারুল ইসলাম জানান, ১০০ দিন প্রকল্পের মাধ্যমে মাঠের খানাখন্দ বোজানো হয়েছে। ১৮০ মিটার লম্বা ও ১১৫ মিটার চওড়া মাঠটির এক পাশের বাঁশ গাছের জঙ্গল এবং ঝোপঝাড় কেটে ফেলা হয়েছে। মাঠের মধ্যে বাইরে থেকে মাটি এনে ভরাট করা হয়েছে। তার পরে মাঠ সমান করা হয়েছে। বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পে মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া টাকায় সাংস্কৃতিক মঞ্চও তৈরি হচ্ছে। আগামী দিনে এই মাঠে নতুন করে ঘাষ লাগানো, ফুটবল খেলার জন্য মাঠের দুই পাশে স্থায়ী গোলপোস্ট তৈরি করা হবে। পিয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা চাই মাঠের চারপাশ ভাল করে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা দেওয়া হোক। স্থানীয় মানুষ চান, যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দফতরের হস্তক্ষেপে এখানে ভাল স্টেডিয়াম করে দিক।’’

এই মাঠে স্থানীয় জয়কৃষ্ণ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আট বছর ধরে আমন্ত্রণমূলক ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দা হোসনে মোবারক, বজলে আহমেদদের কথায়, ‘‘প্রতি বছর ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আগে স্থানীয় মানুষ জনের সহযোগিতায় মাঠ তৈরি করা হয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে মাঠ সংস্কারের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়ে এসেছি। অবশেষে সেই কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি।’’ রামপুরহাট শহরে এমনিতেই খেলার মাঠের অভাব। তাই দিঘিরপাড়ের এই মাঠেই যাবতীয় খেলার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে উঠুক—এমনই চান স্থানীয় মানুষ। কিন্তু, পরে বৃষ্টিতে বা বর্ষায় মাটির গ্যালারি গলে গেলে কী হবে? বিডিও (রামপুরহাট ১) দীপান্বিতা বর্মণ জানান, আগামী দিনে মাটির স্টেডিয়ামকে কংক্রিটের করার পরিকল্পনা আছে। কী ভাবে তা করা যায়, সে নিয়ে আলোচনাও করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

100 days of work Gallery Soil Stadium
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE