Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

জেলা পরিষদের ৩৮ আসনের দৌড়ে ৭০

গোড়ায় সবাই জল মাপছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই জেলা পরিষদের টিকিট পাওয়ার জন্য জমা পড়তে শুরু করেছে আবেদন। আসন ৩৮টি। ইতিমধ্যেই তার জন্য ৭০টি আবেদন এসে গিয়েছে।

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১৬
Share: Save:

গোড়ায় সবাই জল মাপছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই জেলা পরিষদের টিকিট পাওয়ার জন্য জমা পড়তে শুরু করেছে আবেদন। আসন ৩৮টি। ইতিমধ্যেই তার জন্য ৭০টি আবেদন এসে গিয়েছে।

জেলা পরিষদে যাঁরা প্রার্থী হতে চান, তাঁরা হাতে বায়োডেটা লিখে তাঁর কাছে জমা করতে পারেন বলে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। বলেছিলেন, চাইলে আবেদন সরাসরি রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও পাঠানো যেতে পারে। অনেক নেতাই ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছিলেন, জেলা সভাপতি তো কোনও তারিখ বেঁধে দেননি। তাহলে তাড়াহুড়োর কী আছে?

এরই মধ্যে শনিবার ভোটের দিন ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। চলতি সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে মনোনয়ন পর্ব। সময় এখন হাতে গোনা। আর তৃণমূলের অন্দরে ছবিটা পুরো বদলে গিয়েছে। কেউ আবেদনপত্রের বয়ান ঠিক করতে ব্যস্ত। কেউ বায়োডেটার প্রিন্টে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন কিছু বাদ পড়ল কি না দেখতে। জেলা সভাপতির অফিসে সকাল থেকেই ভিড়।

জেলা সভাপতির হয়ে তাঁরই এক ছায়াসঙ্গী আপাতত বিভিন্ন প্রান্তের প্রার্থীদের আবেদনপত্র জমা নিচ্ছেন। তাঁর থেকে জানা গেল, রবিবার দুপুরের মধ্যেই জমা পড়ে গিয়েছে ৭০টি আবেদন। অনেকেই বলছেন, এই তো সবে শুরু হল। শেষ পর্যন্ত সংখ্যাটা কত দাঁড়ায় সেটাই দেখার। দলের বিভিন্ন ব্লক সভাপতি, বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি, ব্লক স্তরের প্রভাবশালী নেতা— অনেকেই জেলা পরিষদে লড়তে আগ্রহী। এ দিকে, দলের পুরনো নেতাদের অনেকেও এগিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবি, রাজ্য নেতৃত্ব এ বারে পুরনোদের গুরুত্ব দিতে বলেছেন।

দাবিদারের সংখ্যাটা যে অনেকটাই বাড়বে সেটা আঁচ করে শান্তিরামবাবু আগাম জানিয়ে দিয়েছেন, জেলা পরিষদে প্রার্থী কারা হবেন সেটা ঠিক করবে রাজ্য নেতৃত্বই। টিকিটের দাবিদার জেলা কমিটির এক সদস্য বলছেন, ‘‘কলকাতার বৈঠকে দলনেত্রী বার্তা দিয়েছিলেন, গত বার যাঁরা জয়ী হয়েছেন, তাঁদের এ বারও টিকিট দেওয়া হবে। কিন্তু সংরক্ষণের জন্য অনেকেরই জেতা আসনে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকছে না। এখন তাঁদের যদি অন্য জায়গা থেকে দাঁড় করানো হয়, তাহলে সেখানকার স্থানীয় নেতাদের আড়ালেই থেকে যেতে হবে।’’ প্রশ্নটা শান্তিরামবাবুর কাছেও আসছে। উত্তরে দরাজ হেসে আশ্বাস দিচ্ছেন, রাজ্য নেতৃত্ব ব্যাপারটা দেখছে।

পরিস্থিতি যা, তাতে শুধু বায়োডেটা জমা করে অনেকেই নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকতে পারছেন না। নিজের নিজের মত করে খুঁটি ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। জেলা সভাপতির কাছে আবেদন জমা করে কেউ কেউ চলে যাচ্ছেন কলকাতা। দলের জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসেও একটা কপি জমা করে আসছেন। দেখেশুনে এক কর্মীর মন্তব্য, ‘‘ব্যাপারটা লটারির দু’খানা টিকিট কাটার মতো।’’

অবশ্য কেউ কেউ বেশ নিশ্চিন্ত। ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন, তাঁরা বিলক্ষণ জানেন জেলা থেকে অন্তত তাঁদের নামে কলম চালানো হবে না। অতএব বেশ নির্লিপ্ত মুখ করে তাঁরা বলছেন, দল যদি মনে করে তা হলেই তাঁরা প্রার্থী হবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Panchayat Election Zila Parishad Nomination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE