হাতে-ধরে: খুদেদের তালিম দিচ্ছেন মিলনবাবু। ছবি: সঙ্গীত নাগ
বয়সের ভারে চলাফেরার অনেকটাই এখন হুইল-চেয়ার নির্ভর। কিন্তু আশি ছুঁয়েও শিখর ছোঁয়ার উৎসাহ কমেনি মিলন সেনগুপ্তের।
পুরুলিয়াতে তাপমাত্রা নেমেছে ছ’ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেটে। সন্ধ্যা হলেই হাড় কাঁপাচ্ছে ঠান্ডা হাওয়া। তার মধ্যে পাহাড়ে চড়া শেখাতে শুক্রবার থেকে রঘুনাথপুরের জয়চণ্ডীতে শিবির শুরু করেছে আসানসোলের একটি সংস্থা। যোগ দিয়েছন আড়াইশো জন। সব থেকে ছোট জনের বয়স ছ’বছর। তালিম দিচ্ছেন মিলন সেনগুপ্ত। সংস্থার কর্ণধার। বয়স আশি। আসানসোলের শ্রীপল্লির বাসিন্দা বৃদ্ধের জীবনের পথজুড়ে পাহাড় আর পাহাড়। ১৯৮২ সালে নন্দাদেবী অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হন তাঁর ভাই অমলেশ সেনগুপ্ত। কিন্তু মিলনবাবুর বুকের পাহাড় টলেনি। এখন নিজে অভিযানে যেতে না পারলেও হাতে-ধরে তালিম দেন ছোটদের।
বড়দের থেকে ছোটদের শেখাতেই বেশি ভাল লাগে তাঁর, জানাচ্ছেন মিলনবাবু। প্রতি বছর জয়চণ্ডীতে শিবির করতে আসেন তাঁরা। এ বার এসেছে জনা দশেক খুদে। শনিবার গিয়ে দেখা গেল, ছ’বছরের রাজদীপ পাল, আট বছরের অভীপ্সা দুবে, ন’বছরের দেবাঞ্জলি গুপ্তদের দড়ির ফাঁস দেওয়ার কায়দা-কানুন শেখাচ্ছেন মিলনবাবু। বললেন, ‘‘পাহাড়ে চড়ার প্রশিক্ষণ পেলে অনেক প্রতিবন্ধকতাকে টপকে যাওয়ার মানসিকতাটা তৈরি হয়ে যায়।’’
আর অভিভাবকদের হচ্ছে অন্য অভিজ্ঞতা। নীলাদ্রি পাল, টিয়া গুপ্ত, মামনি মজুমদররা জানাচ্ছেন, স্কুলের লেখাপড়া আর কম্পিউটারে খেলার বাইরেও যে জীবন আছে, জগত আছে— তা দেখাতেই ছেলেমেয়েদের শিবিরে নিয়ে এসেছেন তাঁরা। পাহাড়ে চড়া শিখতে এসে নিয়ম আর শৃঙ্খলাও রপ্ত করে ফেলছে ছোটছোট ছেলেমেয়েগুলি। ওই অভিভাবকদের কথায়, ‘‘যে কাজগুলো ঘরে আমরা ছেলেমেয়েদের করে দিই, শিবিরে নিজেরাই সেগুলো করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy