বৈঠকে সতর্ক করা হয়েছিল— রেশন নিয়ে কোনও অনিয়ম চলবে না। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই পুরুলিয়ার ৮ জন রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করল জেলা খাদ্য দফতর। শো-কজ করা হয়েছে ১৪ জন ডিলারকে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। কার্যকর হয়েছে সোমবার থেকে।
সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম জেলা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রেশনে অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার পরেই নড়েচড়ে বসে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। এখানেও রেশনে দেওয়া খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। তার উপরে আবার কিছু দিনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর সভা করতে আসার কথা।
জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় জানান, পুরুলিয়ায় ২৬ লক্ষ মানুষকে রেশন দেওয়া হয়। তাঁদের অনেকেই রেশনের উপরে পুরোপুরি নির্ভর করেন। শনিবার ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সমস্ত নিয়মকানুন মানতে হবে। খারাপ চাল এলে সেটা বিলি করা যাবে না। তিনি জানান, বৈঠকের আগেই জেলা জুড়ে তল্লাশি অভিযান করা হয়েছিল। তাতে যে সমস্ত ডিলারের ত্রুটি বিচ্যুতি ধরা পড়েছে, তাঁদেরই সাসপেন্ড এবং শো-কজ করা হয়েছে। কী ধরনের ত্রুটি? জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, যতটা জিনিস মজুত থাকার কথা, অভিযানে কোথাও তার চেয়ে বেশি, কোথাও কম পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও উঠে এসেছে বিভিন্ন গরমিল।
এ দিকে রেশন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে একপ্রস্ত বৈঠক, পরে আবার জেলার সমস্ত রেশন ডিলার, কেরোসিন ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটরদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকের পরে এই নির্দেশের আকস্মিকতায় অবাক রেশন ডিলারদের সংগঠন। ওয়েস্টবেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক প্রভাশিসলাল সিংহ দেও বলেন, ‘‘জেলার বৈঠকের আগে রাজ্যে একই ভাবে বৈঠক হয়েছিল। দু’টি বৈঠকেই বলা হয়েছিল ভাল ভাবে কাজ করতে। কাউকে সাসপেন্ড করার জন্য বৈঠক ডাকা হয়নি বলে উল্লেখ করেছিলেন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। আমরা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে কাজ করব বলে কথা দিয়েছিলাম। কিন্তু বৈঠকের পরেই কয়েক জনকে সাসপেন্ড আর শো-কজ করা হল।’’
তাঁর দাবি, কী কারণে সাসপেন্ড করা হচ্ছে, সেটা বিশদে জানতে পারেননি। এ দিন দফতরে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করে জানতে পারেন, সব আধিকারিকেরাই কলকাতায় বৈঠকে গিয়েছেন। প্রভাশিসবাবু বলেন, ‘‘জেলা খাদ্য নিয়ামক ফিরলে তাঁর কাছে এই ব্যাপারে জানতে চাইব।’’
এমআর ডিলারদের আরেকটি সংগঠন বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা শুনেছি আট জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে বিশদে কিছু জানি না। শনিবারের বৈঠকে তো বলা হয়েছিল যে এখন কাউকে সাসপেন্ড করা হবে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy