Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গলায় বঁটি চালিয়ে আত্মঘাতী, মৃত কনস্টেবল

রক্তে ভিজে যাচ্ছে শরীর। কোনওমতে ফাঁড়ির ব্যারাক থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন কনস্টেবল। সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ তাঁকে এই অবস্থায় দেখে হতবাক হয়ে যান কালনার বুলবুলিতলা ফাঁড়ির পুলিশকর্মীরা।

বুলবুলিতলা ফাঁড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

বুলবুলিতলা ফাঁড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা ও নলহাটি শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২৬
Share: Save:

রক্তে ভিজে যাচ্ছে শরীর। কোনওমতে ফাঁড়ির ব্যারাক থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন কনস্টেবল। সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ তাঁকে এই অবস্থায় দেখে হতবাক হয়ে যান কালনার বুলবুলিতলা ফাঁড়ির পুলিশকর্মীরা। হকচকিয়ে যান পথচলতি মানুষজন। মিকাইল মাড্ডি (৫৫) নামে ওই কনস্টেবলকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে জানানো হয়। পুলিশ জানায়, মৃতের বাড়ি বীরভূমের নলহাটির আলমপুরে। তিনি নিজেই গলায় বঁটি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস সাতেক আগে পূর্বস্থলী থানা থেকে বুলবুলিতলা ফাঁড়িতে আসেন ওই কনস্টেবল। তবে পা ভাঙার জন্য মাস চারেক তিনি ছুটিতে ছিলেন। সম্প্রতি ফাঁড়িতে কাজে যোগ দেন। তাঁকে নিয়ে বুলবুলিতলা ফাঁড়িতে কনস্টেবলের সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ জন। ফাঁড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজে যোগ দিলেও শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ না থাকায় তাঁকে বেশি কাজ দেওয়া হত না। বেশির ভাগ সময় তিনি ফাঁড়িতেই কাটাতেন। কথা বলতেন কম। মাঝে-মধ্যে ব্যারাকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যেত তাঁকে।

পুলিশকর্মীদের দাবি, এ দিন সকাল থেকে মিকাইলবাবুর আচরণে অস্বাভাবিক কিছু নজরে পড়েনি। সকাল ১০টা নাগাদ ব্যারাক থেকে গাড়িতে ইন্দ্রপুর গ্রামের ঝাপান উৎসবে যাওয়ার কথা ছিল অন্য কনস্টেবলদের। গাড়িতে উঠতে যাওয়ার সময়ে তাঁরা দেখেন, ফাঁড়ির পাশেই ব্যারাক থেকে রক্তমাখা অবস্থায় বেরিয়ে আসছেন মিকাইলবাবু। তাঁর গলায় বড় ক্ষত। দ্রুত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে ঘোষণা করা হয়।

এ দিন বুলবুলিতলা ফাঁড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ব্যারাক থেকে রাস্তা পর্যন্ত চাপচাপ রক্ত পড়ে রয়েছে। রয়েছে একটি রক্তমাখা গামছা। ফাঁড়ির আশপাশে মানুষজনের ভিড়। পুলিশের অনুমান, অন্য কনস্টেবলরা রওনা হওয়ার সময়ে ফাঁকা ব্যারাকে আনাজ কাটার বঁটি দিয়ে গলা কেটে আত্মঘাতী হয়েছেন মিকাইলবাবু। ফাঁড়িতে ঘটনার তদন্তে যান এসডিপিও (কালনা) শান্তনু চৌধুরী ও কালনা থানার ওসি প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই কনস্টেবল।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কনস্টেবলের মেয়ে কলকাতা পুলিশে কর্মরত। দুই ছেলের এক জন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছেন। ছোট ছেলে বিশ্বভারতীতে পড়াশোনা করেন। দুই ছেলেই কোনও চাকরি না করায় মিকাইলবাবু দুশ্চিন্তায় ভুগতেন বলে পরিবার সূত্রের দাবি। এ দিন মৃত্যুর খবর আসার পরে নলহাটি থেকে পরিজনেরা কালনা রওনা দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Kalna কালনা Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE