এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগে উঠেছিল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্কুল থেকে সেই শিক্ষককে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরকরার অভিযোগ উঠল জনতার বিরুদ্ধে। রাস্তায় ‘মারধর’ করতে করতে ওই শিক্ষককে তাঁরা থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শিক্ষককে গ্রেফতার করে।
বুধবার বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস থানার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত শিক্ষকের নাম শেখ ফিরোজ খান। বছর ছত্রিশের ওই প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের বাড়ি কোতুলপুরে। পাত্রসায়র থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো আইনে (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফর্ম সেক্সুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্ট) মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত বা তাঁর পরিবারের কাছে এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই অভিভাবক তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, এ দিন তাঁর মেয়ে কিছুতেই স্কুলে যেতে চাইছিল না। কিন্তু তার আপত্তির কারণও সে জানাচ্ছিল না। মায়ের বকুনি খেয়ে অনেক কান্নাকাটি করার পরে সে তার মা-কে জানায়, ওই শিক্ষক প্রায়ই তার শ্লীলতাহানি করে। এমনকি সে যাতে বাড়িতে এ ব্যাপারে কিছু না জানায়, তার জন্য ভয়ও দেখিয়েছিল। শুধু সেই নয়, ওই শিক্ষক তার আরও কিছু সহপাঠীর সঙ্গেও একই রকম ব্যবহার করে বলে মেয়েটি দাবি করেছিল। তারাও ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই খবর ছড়িয়ে পড়তে এ দিন এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। উত্তেজিত জনতা স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকার কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানান। অভিযোগ, তারপর স্কুল থেকেই ওই শিক্ষককে জনতা তুলে নিয়ে থানার দিকে রওনা দেন। সেই সময় রাস্তায় শিক্ষককে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে, পুলিশের কাছে শিক্ষক বা তাঁর পরিবারের তরফে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
অভিভাবকদের একাংশ দাবি করেন, ওই শিক্ষকের আচরণ নিয়ে মেয়েদের কাছে অভিযোগ শুনে আগেও তাঁরা প্রধান শিক্ষিকাকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি বলে তাঁদের দাবি। যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার দাবি, ‘‘এর আগে আমার কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেউ লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাননি। ২০১৭ সাল থেকে ওই শিক্ষক এই স্কুলে রয়েছেন। কোনও দিন তাঁর সম্পর্কে খারাপ কিছু আমার নজরে আসেনি। কোনও ছাত্রীও অভিযোগ করেনি।’’
তাঁর অভিযোগ, এ দিন তিনি অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা তা না করে স্কুলে ঢুকে ওই শিক্ষককে তুলে নিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘‘এ কথা পুলিশ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) জগবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বিকেলে বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। তবে এ বিষয়ে এখনও আমাকে কেউ কিছু জানাননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy