Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন

গ্রামে বিয়ে দিলে জানাজানি হবে। তাই মামাবাড়ি থেকে বিয়ের আয়োজন পাকা করে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইঁদপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০০:১৩
Share: Save:

গ্রামে বিয়ে দিলে জানাজানি হবে। তাই মামাবাড়ি থেকে বিয়ের আয়োজন পাকা করে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বৃহস্পতিবার, নাবালিকার বিয়ে রুখে দিল বাঁকুড়া জেলা চাইল্ড লাইন ও ইঁদপুর থানার পুলিশ।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইঁদপুর থানা এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী স্থানীয় স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। কন্যাশ্রী প্রকল্পে নামও রয়েছে তার। ওই থানা এলাকারই মল্লু গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে ঠিক করেন তার অভিভাবকেরা। শুক্রবার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে খবর পেয়ে জেলা চাইল্ড লাইনের কর্মীরা পুলিশ কর্মীদের নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামে যান। কিন্তু সেখানে ওই কিশোরীকে পাওয়া যায়নি। খোঁজখবর নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, কিছুক্ষণ আগে ওই কিশোরীকে মামাবাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরে চাইল্ড লাইনের কর্মীরা সেখান থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ওই কিশোরীর মামার বাড়িতে যান। নাবালিকার পরিবারের লোকজনকে বিয়ে বন্ধ করার জন্য বুঝিয়ে বলা হয়। চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, প্রথমে পরিবারের লোকজনেরা রাজি হননি। পরে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পেরে তাঁরা বিয়ে বন্ধ করেন।

জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর সজল শীল বলেন, “ওই গ্রামে যে এক নাবালিকার বিয়ের তোড়জোড় চলছে তা বুধবার বিকেলে জানতে পারি। এরপর ইঁদপুরের বিডিও, থানার ওসি-কে বিষয়টি জানানো হয়। গ্রামে গিয়ে জানা যায় কিশোরীটিকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ তাঁর দাবি, ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে আইনত অপরাধ, পুলিশ এবং চাইল্ড লাইনের কর্মীরা তা বুঝিয়ে বলায় নাবালিকার বাবা-মা বিয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এ ব্যাপারে একটি লিখিত মুচলেকাও দিয়েছেন তাঁরা।

ওই কিশোরীর বাবা পেশায় ক্ষুদ্র চাষি। এ দিন তিনি বলেন, “আমরা গরিব। প্রায় বিনা পণে ভাল পাত্র পাওয়ায় তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। তবে মেয়ের ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে বিয়ে দেব না বলে এখন স্থির করেছি।’’

কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার পরেও মেয়ের বিয়ে দিতে চাওয়ার এই ঘটনা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “কন্যাশ্রী প্রকল্পে নাম থাকা সত্ত্বেও ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বিশেষ কমেনি। খবর পেলে চাইল্ড লাইন ও পুলিশ দ্রুত বিয়ে বন্ধ করছে। তবে বাল্যবিবাহ রোধের জন্য আরও সচেতনতা দরকার। গ্রামাঞ্চলে প্রচারে খামতি রয়ে গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Minor Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE