ফাইল চিত্র।
করোনা-আবহে বাড়িতে বসে না থেকে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার করতে হবে। শুক্রবার ভিডিয়ো বৈঠকে দলের বিধায়ক, মন্ত্রী ও পর্যবেক্ষকদের এমন বার্তা দেওয়ার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোকে প্রশ্ন করেছিলেন, তিন মাস তিনি কোথায় ছিলেন? ঘটনা হল, শুধু শান্তিরামবাবুই নয়, ‘লকডাউন’-এর গোড়ার দিকে কয়েক মাস জয়পুরের তৃণমূল বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতো-সহ আরও কিছু তৃণমূল বিধায়ককে সে ভাবে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়নি বলে দল সূত্রের খবর। কর্মীদের কথায়, বিজেপি গ্রামে গ্রামে নানা রকম কর্মসূচি নিয়েছে। তার মোকাবিলায় সমস্ত নেতাকে এ বার সক্রিয় ভাবে নামতে হবে।
‘লকডাউন’ শুরু হতেই শান্তিরামবাবুকে সে ভাবে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না। তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্নও উঠতে শুরু করে। ‘লকডাউন’ কিছুটা গড়ানোর পরে ফের বিভিন্ন দল থেকে তৃণমূলে যোগদান শুরু হয়। সাধারণত দলবদলের অনুষ্ঠানে শান্তিরামবাবুই উপস্থিত থাকতেন। তবে ওই সময়ে বিরোধী দল থেকে আসা নবাগতদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিতে দেখা যাচ্ছিল দলের জেলা বরিষ্ঠ সহ-সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
শান্তিরামবাবুর ঘনিষ্ঠ মহলের ব্যাখ্যা, ৬৫ বছরের শান্তিরামবাবুর ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদযন্ত্রের সমস্যা আছে। দৈনিক এক গুচ্ছ ওষুধ খেতে হয় তাঁকে। খাওয়া-দাওয়া করতে হয় পরিমাপ মতো। তাই ডাক্তারেরা তাঁকে ‘লকডাউন’-এর গোড়ার দিকে খুব বেশি বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই সময়ে তিনি কয়েকদিন পুরুলিয়া শহরের ভাড়াবাড়িতে, কয়েকদিন সার্কিট হাউসে কাটিয়েছেন। সেখান থেকেই ফোনে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগযোগ রেখে দলের কাজ চালিয়েছেন। কয়েকবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বলরামপুর এলাকাতেও গিয়েছেন।
তবে ‘আনলক ১’ শুরু হওয়ার পরেই ফের সক্রিয় ভাবে জেলার রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন শান্তিরামবাবু। বেশ কয়েকটি দলবদলের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। দীর্ঘদিন পরে দলের জেলা নেতাদের নিয়ে সম্প্রতি পুরুলিয়া শহরে বৈঠকও করেছেন। শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে বেশি করে মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো কাজ করছি।”
তবে ঘটনা হল, শাসকদলের বিধায়কদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনা-পরিস্থিতিতে ‘লকডাউন’ চলায় তাঁদের খুব বেশি বাইরে না বেরোনোর জন্যই পরামর্শ দিয়েছিল প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। ওই বিধায়কদের দাবি, ‘‘লকডাউন-এ ত্রাণসামগ্রী দিতে তাঁরা গ্রামে গেলেই ভিড় জমছিল। লকডাউনে জমায়েত বন্ধ, সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখার প্রশ্ন ছিল। সে কথা মাথায় রেখেই সর্তকতা নিয়েই ঘোরাঘুরি করেছি।’’
তারই মাঝে কাশীপুরের স্বপন বেলথরিয়া, রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি, পাড়ার বিধায়ক উমাপদ বাউরি, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেনদের ত্রাণ সামগ্রী দিতে, ‘কোয়রান্টিন সেন্টার’ পরিদর্শনে যেতে দেখা গিয়েছে। ওই বিধায়কদের কথায়, ‘‘লকডাউন পর্বে দলীয় কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ ছিল। তাই প্রশাসনিক কাজকর্ম ও দুঃস্থদের সাহায্য করার কাজ চালিয়ে গিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy